আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। প্রতিটা রাজনৈতিক দল তাদের রণকৌশল ঠিক করে ময়দানে নেমে পড়েছে। গতকাল দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভা করে ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের ডঙ্কা বাজিয়ে গিয়েছেন। এরাজের শাসকদলকে বাছা বাঁছা শব্দে আক্রমণ করেছেন।
তৃণমূল হটিয়ে বাংলা বাঁচানোর ডাক শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। শুধু তাই নয় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথাও বলেছেন মোদি। শনিবার চুঁচুড়ায় একুশে জুলাইয়ের সমর্থনে এসে পাল্টা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রচনা বলেন, 'উনি শুধু বিনিয়োগের কথাই বলেন কিন্তু করে উঠতে পারেন না। তিনি কর্মসংস্থান দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু দিয়ে উঠতে পারেন না। তাঁরা পার্লামেন্টেও চেঁচামেচি করেন। বাংলায় এসে সভা করেও চেঁচামেচি করেন। কিন্তু ফল পান না। ইসবার ৪০০ পার, ইসবার ২০০ পার, ৫০ পার ভি নেহি হো রাহে। তাঁরা শুধু চেঁচাতেই থাকেন। আর আমরা শুধু জিততেই থাকি। চলতেই থাকি। মানুষ কথা বলার জন্য ডায়লগ খুঁজে বেড়ান। তাঁরা ডায়লগ বলতে ভালবাসেন। আমরা কাজ করে দেখাতে পছন্দ করি।'
আরও পড়ুন: বৃক্ষরোপণ করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, মন্ত্রী বেচারাম মান্নার অভিনব উদ্যোগ
গতকাল, শুক্রবার দুর্গাপুরে দলীয় জনসভার মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তৃণমূল নিজের স্বার্থে বাংলার সম্মানকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে ফন্দি এঁটেছে। অনুপ্রবেশকারীদের দেশে কোনও জায়গা নেই। যে ভারতের নাগরিক নয়, বেআইনি অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা মোদির গ্যারান্টি।'
প্রসঙ্গত, গত বেশ কিছু দিন ধরে বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা, ধরপাকড়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। বাংলাদেশি সন্দেহে হুগলির বাসিন্দাকে আটক করা হয় ওড়িশায়। চরম হয়রানির শিকার হুগলির পরিযায়ী শ্রমিক। যাবতীয় প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও চলে চরম হেনস্থা। অনেক কষ্টে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন রবীন্দ্র নগরের দেবাশিস দাস। জানান হয়রানির কথা।
জানা গেছে, ওড়িশার ঝারসুগুডা জেলায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়। কাজে ওড়িশায় গিয়েছিলেন জুন মাসের ১৪ তারিখ। এক সংস্থার সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়া ২ নং রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশিস দাস। শুধু তিনি এক ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। তাঁরা ওই সংস্থার ওড়িশায় চলা বিভিন্ন প্রজেক্টের ফায়ার সিস্টেমের কাজ করেন।
দেবাশিসের অভিযোগ, ওই দিন কাজের জায়গায় পৌঁছনো মাত্রই বিনা কারণে তাঁকে আটক করা হয়। তারপর ওড়িশার স্থানীয় পুলিশের দ্বারা চরম হয়রানির শিকার হন তিনি। আটক করার পর তাঁদের কাজের জায়গা থেকে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। কী কী ডকুমেন্ট আছে, তা দেখতে চাওয়া হয়।
দেবাশিসের কাছে পাসপোর্ট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র সহ স্কুলের মাধ্যমিকের এবং পুলিশ ভেরিফিকেশান সার্টিফিকেট সবই ছিল। তিনি সেই যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দেখান। কিন্তু কোনও লাভ হয় না। ওই আধিকারিকরা তাঁর কাছে থাকা সরকারি পরিচয়পত্রকে কোনও গুরুত্ব দেন না। সেগুলো দেখার পড়ে ছাড়া তো দূরের কথা, উল্টে তাঁর ফোন কেড়ে নেন। তারপর থেকে বাড়িতে পরিজনদের সঙ্গে বা সংস্থার ঠিকাদারের সঙ্গেও কোনও কথা তাঁকে আর বলতে দেওয়া হয়নি।
