আজকাল ওয়েবডেস্ক: নলহাটি বিধানসভার রুদ্রনগর পঞ্চায়েতের সুবুদিঘি গ্রামে শনিবার এক জনসভায় ফের স্বমহিমায় দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলকে। ওই সভা থেকেই নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তিনি। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল এদিন নিজের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ ও বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ভয় দেখিয়ে তাঁকে দমানো যাবে না।

 

সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে অনুব্রত বলেন, "আমি ভয় পাই না। আমি কোনওদিন চুরি করিনি, ডাকাতি করিনি। মানুষের উপকার করতে এসে যদি জেলে যেতে হয়, তাহলে আমি জেলে যাব। আবারও যাব। দল করতে এসে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমার কাজ। ভয় দেখিয়ে আমাকে রোখা যাবে না। কথায় কথায় বলছে জেলে রেখেছিলাম, আমাকে আটকে রেখে কী পেলেন? কিছুই তো পেলেন না।"

 

এরপর অনুব্রত বলেন, "এসআইআর করলেন, কিছু তো পেলেন না। কিছু পেলেন কি? মানুষ আসলটা জানে।" তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, "এখানে নাকি মায়ানমারের লোক‌ আছে! এখানে আছে নাকি মায়ানমারের মহিলা? লজ্জা লাগে না? আপনারা মুরারইয়ের সোনালিকে বলে দিলেন তুমি বাংলাদেশি!" অনুব্রতর ভাষায়, এই রাজনীতিকে তিনি বাংলার মানুষের অপমান বলে মনে করেন।

সভামঞ্চ থেকেই অনুব্রত বলেন, "আমরা রোহিঙ্গা নই, আমরা মায়ানমারের মানুষ নই। আমরা বাঙালি। আমাদের জন্ম হয়েছে এই বাংলার মাটিতে। আমাদের মৃত্যু হবে এই বাংলার মাটিতেই। এই মাটি বাংলার মাটি, আর এই মাটির অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।" তাঁর কথায়, বিভাজনের রাজনীতি করে বাংলার মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা সফল হবে না। 

 

কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, "রাজনীতি করতে এসে ভয় পেয়ে ঘরে বসে থাকার মানুষ আমি নই। আগে জেলে গিয়েছি, দরকার হলে আবারও যাব। মানুষের জন্য কাজ করাই আমার রাজনীতি, আর সেই কাজ আমি চালিয়ে যাব।"

 

রাজনৈতিক বক্তব্যের পাশাপাশি সভা শেষে স্থানীয় সমস্যাও সামনে আসে। সুবুদিঘি গ্রামের একাধিক মহিলা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কটের কথা জানান। তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পর্যাপ্ত পানীয় জল মিলছে না, নিত্যদিন সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি শুনে অনুব্রত মণ্ডল মঞ্চ থেকেই গ্রামের প্রধানকে নির্দেশ দেন, গ্রামের পানীয় জলের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে। এই বিষয়ে কোনও অবহেলা চলবে না বলেও তিনি জানান।

 

সব মিলিয়ে নলহাটির সুবুদিঘি গ্রামের এই জনসভা থেকে অনুব্রত মণ্ডলের সরাসরি ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য বুঝিয়ে দিল আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।