আজকাল ওয়েবডেস্ক: ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল তিনটি হাতির। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটছে, ঝাড় গ্রামের বাঁশতলা-সরডিহা স্টেশন এলাকায়। রেল লাইনে হাতির দেহগুলি পড়ে থাকায় খড়গপুর-টাটা লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গতকাল রাত্রে ঝাড়গ্রাম জেলার মানিকপাড়া রেঞ্জ এলাকায় প্রায় দশটি হাতিকে বাঁশতলার দিক থেকে 'ড্রাইভ' করানো হচ্ছিল। সেই সময় জনশতাব্দী এক্সপ্রেস খড়্গপুর যাওয়ার সময় একটি পূর্ণবয়স্ক ও দু'টি সাবক হাতি বাঁশতলা স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনের উপরে উঠে পড়ে। তখনই ট্রেনে ধাক্কাতে তিনটি হাতির মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে বনদপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও রেল আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে হাতির মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হুলা পার্টির সদস্য নিয়োগ না করার ফলে একের পর এক হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই ব্যাপারে বনদপ্তরের কোন পদক্ষেপ করছে না।
কবে হুশ ফিরবে বনদপ্তরের? সেই প্রশ্ন তুলছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
বঙ্গে বাড়ছে হাতির সংখ্যা:
 
 পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে হাতির সংখ্যা। গত এক বছরে দেড়শো হাতি বেড়েছে বাংলায়। বাংলায় বর্তমানে হাতির সংখ্যা ৮০০। ২০২০-২০২১ সালে যেখানে ২৫০-২৮০টি হাতি ছিল, তা এখন বেড়ে ৮০০টি হয়ে গিয়েছে। অন্তত ২০২৪ সালের ডিসেম্বর অবধি পাওয়া তথ্য বা পরিসংখ্যান তাই বলছে।
এতদিন অভিযোগ আসত উত্তরবঙ্গে রেল লাইনে চলে আসছে হাতি। একাধিক বার দুর্ঘটনা ঘটছে। হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আবার ইমারজেন্সি ব্রেক কষে প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে হাতির। বারবার বন্যপ্রাণী রক্ষায় রেলের গতি হেরফের করেছে। এবার উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গর পশ্চিমের জেলাগুলিতে বেড়েছে হাতির সংখ্যা। যার ফলে রেল লাইনে হাতি এসে বিপদ ঘটানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না রেল। মাঝে মধ্যেই রেল লাইনের পাশে তাদের উপস্থিতিও টের পাওয়া গেছে। এই অবস্থায় হাতি নিয়ে সাবধানী রেল।
আরও পড়ুন- সকাল থেকেই রোদ-ভ্যাপসা গরম, বেলা বাড়লেই ঝেঁপে বৃষ্টি নামবে এইসব জায়গায়, তালিকায় কি আপনার জেলাও?
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় ২০১৭ সালে মোট হাতি ছিল ১৯৪টি। বর্তমানে ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৪টি। অর্থাৎ এই আট বছরে ৩০ হাতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে হাতি আছে ৪৪ টি, নয়াগ্রামে ৩৪ এবং সাঁকরাইল ব্লকে ৬৬ হাতি আছে। বাকি ৮০টি হাতি ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন রেঞ্জে
বন দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বছরে প্রায় ১০ শতাংশ করে হাতি বাড়ছে। জানা গিয়েছে, নয়াগ্রাম এবং সাঁকরাইল ব্লকে ১০টির কাছাকাছি শাবক রয়েছে। অন্য দিকে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জে জঙ্গলে শাবক রয়েছে ছয় থেকে সাতটি। এরাই মাঝে মধ্যে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। এরাই চলে আসছে রেল লাইনের কাছাকাছি।
সম্প্রতি বিধানসভায় উল্লেখ করেছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেছেন, আমরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। বনকর্মীদের খবর দেওয়ার পর তাঁরা না আসা পর্যন্ত গ্রামবাসীরা যাতে হাতিদের উত্যক্ত না করেন। বনকর্মীরা সর্বক্ষণ ডিউটি করেন। ছুটি নেই বললেই চলে।
