আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের মৃত্যু এসআইআর আতঙ্কে! ২০০২ এর তালিকায় নাম ছিল তাঁর নিজের। অথচ নাম নেই তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। পরিবার সূত্রে খবর, এসআইআর আতঙ্কে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বাদুড়িয়ার ওই প্রৌঢ়।

মৃতের নাম সফিকুল মণ্ডল (৫৮)। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার যদুরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় সফিকুল মণ্ডলের নিজের নাম থাকলেও পরিবারের অন্যদের না থাকায় প্রায় ১৫ দিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলেন। শেষ তিনদিন তিনি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার জেরেই মঙ্গলবার  দুপুরে কীটনাশক খান বলেই অভিযোগ।  মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

 সফিকুলের বড় ছেলে রুহুল আমিন মণ্ডল জানান, 'এসআইআর শুরুর পর থেকেই বাবা আতঙ্কের মধ্যেই ছিলেন । ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় বাবার নাম ছিল কিন্তু আমাদের তিন ভাইয়ের এবং বোনের নাম না থাকায় বেশ ১৫ দিন ধরে আতঙ্কে কাটাচ্ছিলেন, শেষ তিন দিন খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন অবশেষে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করলেন এস আই আর আতঙ্ক নিয়ে।' 

বাদুড়িয়া বিধানসভার বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিম জানান, 'আমি আজ বুধবার সকালে সফিকুল মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলাম তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলাম এবং কথাবার্তা বলার পর জানতে পারলাম উনি বেশ কয়েকদিন ধরে এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন। কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন ।'

 

এর আগে, ১৬ নভেম্বর জানা যায়, এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক মহিলা। গত ৪ নভেম্বর রাজ্য জুড়ে এসআইআর শুরুর পর এই নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট তিনজন ব্যক্তি আত্মঘাতী হলেন এবং আরও দু'জন ব্যক্তি এসআইআর আতঙ্কে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এসআইআর শুরুর প্রথম দিনই কান্দি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাগডাঙ্গা এলাকায় মোহন শেখ নামে বছর পঞ্চান্নর এক কৃষক বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন। ঘটনার দিন ওই পরিবারে তরফ থেকে দাবী করা হয় ২০০২-এর ভোটের তালিকায় মোহনের নাম না থাকায় তিনি আতঙ্কে ছিলেন এবং সেই কারণেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। 

 

এরপর গত ৬ তারিখ বহরমপুর থানার গান্ধী কলোনী এলাকায় তারক সাহা নামে এক ঝাল মুড়ি ব্যবসায়ী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। ওই ব্যক্তির নাম ২০০২-এর ভোটার তালিকায় ছিল না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার জিতেন রায় নামে এক ব্যক্তি এবং নওদা থানা এলাকার বাসিন্দা বাসিন্দা ইসরাইল মোল্লা নামে অপর এক ব্যক্তি এসআইআর আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে তাদের পরিবারের তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে। 

 

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির নির্দেশে ইতিমধ্যেই শাসক দলের প্রতিনিধিরা এসআইআর আতঙ্কে মুর্শিদাবাদে মৃত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করে তাদের সকলের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।