নাম নেই ২০০২-এর তালিকায়! মেদিনীপুরে বৃদ্ধর মৃত্যুতে পরিবারের অভিযোগ 'SIR আতঙ্ক'

নিজস্ব চিত্র।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত কয়েকদিনে, এসআইআর-এর কাজ চলার সঙ্গে সঙ্গেই সামনে এসেছে অভিযোগ। আতঙ্কে মৃত্যুর। এবার ঘটনাস্থল মেদিনীপুর। জমুনাবালি বুথের ওই ব্যাক্তির নাম শ্যামল বসু। বয়স ৬৮।

শ্যামল বসুর পরিবার গোটা ঘটনায় অভিযোগ তুলেছেন এসআইআর আতঙ্কের দিকে। পরিবারের অভিযোগ, ২০০২ এর তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। প্রথম থেকেই মানসিক চাপে ভুগছিলেন। সেই চাপ, আতঙ্ক থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে  ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। সূত্রের খবর তেমনটাই।  

ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই, শ্যামল বসুর বাড়িতে যান, খড়গপুর গ্রামীণের তৃণমূল বিধায়ক দীনেন রায়। ওই ব্যক্তি তাঁরই বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। 

 

২৫ নভেম্বর সামনে আসে, পূর্ব মেদিনীপুরের মৃত্যুর ঘটনা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানার অন্তর্গত দেশপ্রাণ ব্লকের পূর্ব আমতৌলিয়া গ্রামের সুষমা রানী মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে খবর, এসআইআর ফর্মে কিউআর কোড গরমিলের কারণে গত কয়েকদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন দু'বারের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুষমা।

 

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে তীব্র মানসিক চাপের কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, গতকাল রাতে রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 

 

ইতিমধ্যে একদিকে যেমন এসআইআর এর কাজের চাপে বিএলও'দের অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তেমনই মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। অন্যদিকে রাজ্যের নানা প্রান্তে এসআইআর আতঙ্কে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ উঠে এসেছে। ১৯ নভেম্বর সামনে আসে বাদুড়িয়ার ঘটনা। পরিবার সূত্রে খবর, এসআইআর আতঙ্কে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বাদুড়িয়ার ওই প্রৌঢ়। মৃতের নাম সফিকুল মণ্ডল (৫৮)। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার যদুরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় সফিকুল মণ্ডলের নিজের নাম থাকলেও পরিবারের অন্যদের না থাকায় প্রায় ১৫ দিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলেন। শেষ তিনদিন তিনি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার জেরেই মঙ্গলবার  দুপুরে কীটনাশক খান বলেই অভিযোগ।  মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

 

সফিকুলের বড় ছেলে রুহুল আমিন মণ্ডল জানান, 'এসআইআর শুরুর পর থেকেই বাবা আতঙ্কের মধ্যেই ছিলেন । ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় বাবার নাম ছিল কিন্তু আমাদের তিন ভাইয়ের এবং বোনের নাম না থাকায় বেশ ১৫ দিন ধরে আতঙ্কে কাটাচ্ছিলেন, শেষ তিন দিন খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন, শেষে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করলেন এস আই আর আতঙ্ক নিয়ে।' 

 

এর আগে, ১৬ নভেম্বর জানা যায়, এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক মহিলা। গত ৪ নভেম্বর রাজ্য জুড়ে এসআইআর শুরুর পর এই নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট তিনজন ব্যক্তি আত্মঘাতী হলেন এবং আরও দু'জন ব্যক্তি এসআইআর আতঙ্কে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এসআইআর শুরুর প্রথম দিনই কান্দি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাগডাঙ্গা এলাকায় মোহন শেখ নামে বছর পঞ্চান্নর এক কৃষক বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন। ঘটনার দিন ওই পরিবারে তরফ থেকে দাবী করা হয় ২০০২-এর ভোটের তালিকায় মোহনের নাম না থাকায় তিনি আতঙ্কে ছিলেন এবং সেই কারণেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।