আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর আতঙ্কে আরও এক প্রাণহানি বাংলায়। এবার ঘটনাস্থল পুরুলিয়ায়। শুনানিতে সময়মতো পৌঁছতে না পারায়, চরম আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন এক বৃদ্ধ। এসআইআর-শুনানি ঘিরে আগে থেকেই দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। শুনানির দিনেই চরম পদক্ষেপ করলেন তিনি।
জানা গেছে, মৃত বৃদ্ধের নাম, দুর্জন মাঝি (৮২)। তিনি পুরুলিয়ার আনারার পাড়া ব্লকের চৌতালা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আজ শুনানির জন্য ডাকা হয়েছিল তাঁকে। সোমবার সকাল থেকেই দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। শুনানিতে বেরিয়েও, মাঝপথেই আত্মঘাতী হন তিনি।
মৃত বৃদ্ধের স্ত্রী ও ছেলে জানিয়েছেন, শুনানির জন্য সময়মতো বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু বাইরে বেরিয়েও কোনও টোটো পাননি শুনানি কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য। যার জেরে আরও দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে তাঁর। সময়মতো শুনানি কেন্দ্রে পৌঁছতে না পারলে, ঝামেলা হতে পারে, এই আতঙ্কে চরম পদক্ষেপ করেন। এরপর গ্রামের অদূরে রেললাইনে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। চৌতালা গ্রামের পাশে রেললাইন থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
https://www.youtube.com/@aajkaalinofficial
প্রসঙ্গত, এসআইআর আতঙ্কে বাংলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসআইআর আতঙ্কে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে আগরপাড়ায়। প্রদীপ করের মৃত্যুতে প্রতিবেশীরা দাবি করেছিলেন, তাঁর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। তবুও তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তাই নিজেকে শেষ করে দেন।
বীরভূমের ইলামবাজারে ক্ষিতীশ মজুমদার (৯৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলেও তাঁর পরিবারের অভিযোগ ছিল। পানিহাটির প্রদীপ করের পর প্রাণ হারান পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার কোরা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্ষিতীশ। বেশ কয়েক মাস আগে বীরভূমে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে ইলামবাজারের স্কুলবাগান সুভাষপল্লীতে স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত আতঙ্কই তাঁকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের জয়পুর এলাকার যুবক সফিকুল গাজি (৩৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তাঁরা স্ত্রী জানান, গত কয়েক দিন ধরে আতঙ্কে ছিলেন স্বামী। বারবার বলছিলেন, তাঁর কোনও পরিচয়পত্র নেই। ভাই-বাপ কেউ নেই। স্ত্রী বারবার অভয় দেওয়ার চেষ্টা করলেও গত বুধবার সকালে তিনি নিজেকে শেষ করে দেন।
এই আবহে বহরমপুর থানার অন্তর্গত গান্ধী কলোনী এলাকায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন এক ব্যবসায়ী। সেক্ষেত্রেও পরিবাররে দাবি ছিল, আত্মহত্যার কারণ এসআইআর আতঙ্ক। ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় ‘দেশ ছাড়তে হবে’ এই আতঙ্কে গত ৪ নভেম্বর কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন মুর্শিদাবাদের কান্দির মোহন শেখ (৫৫)।
