আজকাল ওয়েবডেস্ক: অপারেশনাল সমস্যার কারণে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ পূর্ব রেল। জানানো হয়েছে, এই সমস্যার জন্য একসঙ্গে মোট ১৮টি মেমু লোকাল ট্রেন বাতিল করার কথা জানানো হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে।

জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২ জানুয়ারি ও ৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ট্রেনগুলি চলাচল করবে না।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর–বেলদা, বেলদা–খড়্গপুর, খড়্গপুর–ঝাড়গ্রাম, ঝাড়গ্রাম–খড়্গপুর, ঝাড়গ্রাম–পুরুলিয়া, পুরুলিয়া–ঝাড়গ্রাম, বিষ্ণুপুর–ধানবাদ, ধানবাদ–বাঁকুড়া, বাঁকুড়া–ময়নাপুর, ময়নাপুর–বাঁকুড়া-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুটের মেমু ট্রেন বাতিল থাকছে।

এর পাশাপাশি চক্রধরপুর–রাউরকেলা, রাউরকেলা–ঝারসুগুদা, ঝারসুগুদা–সম্বলপুর ও সম্বলপুর–ঝারসুগুদা রুটের মেমু ট্রেনও এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়েছে।

দক্ষিণ পূর্ব রেলের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে খড়্গপুর–বেলদা, ঝাড়গ্রাম–পুরুলিয়া-সহ বেশ কয়েকটি মেমু ট্রেন বাতিল থাকবে।

অন্যদিকে, ৩ জানুয়ারি থেকে ঝারসুগুদা–সম্বলপুর, সম্বলপুর–ঝারসুগুদা, ঝারসুগুদা–রাউরকেলা এবং রাউরকেলা–চক্রধরপুর রুটের মেমু পরিষেবাও বন্ধ রাখা হবে।

এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে নিত্যযাত্রীদের। অফিসযাত্রী, পড়ুয়া ও ব্যবসায়ীদের বড় অংশ প্রতিদিন মেমু লোকাল ট্রেনের উপর নির্ভরশীল।

আচমকা এত সংখ্যক ট্রেন বাতিল হওয়ায় বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন যাত্রীরা। দক্ষিণ পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে যাত্রীদের এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে। তবে কবে নাগাদ পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা জানানো হয়নি।

শুক্রবার থেকে ভারতীয় রেল টিকিটের দাম বাড়াচ্ছে। সংশোধিত ভাড়া অনুযায়ী, নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাতায়াতে এবার যাত্রীদের অতিরিক্ত ১০ টাকা দিতে হবে।

তবে, শহরতলির (লোকাল) ট্রেন পরিষেবা এবং মাসিক সিজন টিকিটের (এমএসটি) ক্ষেত্রে এই বর্ধিতহারে টিকিটের ভাড়া প্রযোজ্য হবে না।

সাধারণ শ্রেণিতে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যাত্রার ক্ষেত্রেও কোনও ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ২০২০ সালের পর ২০২৫ সালের জুলাই মাসে ট্রেনের টিকিটের ভাড়া বাড়িয়েছিল ভারতীয় রেল।

চলতি বছর আরও একবার টিকিটের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা করা হল। অর্থাৎ এই বছরে দু’বার বাড়ানো হল ট্রেনের টিকিটের দাম।

রেল মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের নন-এসি কোচের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে দুই পয়সা করে বাড়িয়েছে। এসি শ্রেণির ভাড়াও প্রতি কিলোমিটারে দুই পয়সা বাড়ানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে ভারতীয় রেল জানিয়েছে যে, এই ভাড়া সমন্বয়ের ফলে চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত এক দশকে রেলওয়ে তার নেটওয়ার্ক ও কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন রেল পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে।

এই বর্ধিত কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং নিরাপত্তা জোরদার করতেই টিকিটের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে বলে জানানো বয়েছে।

ভারতীয় রেলের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ট্রেন চালানো, জনবল-সহ নানা খরচ বেড়ে ১,১৫,০০০ কোটি টাকা হয়েছে। পেনশন বাবদ খরচ বেড়ে ৬০,০০০ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পরিচালনার মোট খরচ বেড়ে ২,৬৩,০০০ কোটি টাকা হয়েছে।’

উচ্চ জনবল ব্যয় মেটাতে জাতীয় পরিবহন সংস্থাটি বলেছে যে, তারা যাত্রী ভাড়ার যৌক্তিকীকরণের পাশাপাশি পণ্য পরিবহন বাড়ানোর কথাও বিবেচনা করছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ, ‘নিরাপত্তা এবং উন্নত পরিচালনার ক্ষেত্রে এই প্রচেষ্টার ফলে রেলওয়ে নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পেরেছে।

ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পণ্য পরিবহনকারী রেলওয়েতে পরিণত হয়েছে।’ এছাড়াও বিবৃতি বলা হয়েছে যে, ‘উৎসবের মরসুমে ১২,০০০-এরও বেশি ট্রেন সফলভাবে পরিচালনা করাও ভারতী রেলের উন্নত কার্যক্রমের একটি উদাহরণ।’