আজকাল ওয়েবডেস্ক: বীরভূমের মহম্মদবাজারে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্তব্যরত এক নার্সকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনার রেশ কাটার আগেই এবার মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা হাসপাতালে এক রোগীর পরিজনদের হাতে আক্রান্ত হলেন সেখানে কর্তব্যরত কয়েকজন নার্স। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ। এই ঘটনায় জড়িতদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে কান্দি থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নার্সদের উপর হামলা চালানো ছাড়াও হাসপাতালের একটি 'নার্সিং স্টেশন'-এ ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে রোগীর পরিজনরা।

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ,শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ খড়গ্রাম থানা এলাকা থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে একজন রোগীকে কান্দি মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই রোগীর চিকিৎসায় দেরি করা হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে তাঁর সঙ্গে থাকা তাঁর পরিজনরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। 

 

অভিযোগ উঠেছে, ওই রোগীর সঙ্গে হাসপাতালে আসা কিছু মহিলা ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত কয়েকজন নার্সের উপর হামলা চালান। তাঁদের মধ্যে একজন নার্সিং স্টাফের আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরই হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী এবং উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা সেখানে চলে আসেন। তাঁদের হস্তক্ষেপে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

 

আরও পড়ুন: আর কয়েক ঘণ্টা, প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মান্থা, বাংলায় অতি ভারী বৃষ্টি কবে থেকে? জানুন আবহাওয়ার মেগা আপডেট

 

ওই হাসপাতালে কর্মরত শুক্লা সিনহা নামে একজন সিনিয়র নার্স বলেন, 'শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ একজন রোগীকে শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির জন্য আনা হয়েছিল। ওই রোগীর সঙ্গে প্রায় ২৫-৩০ জন এসেছিলেন।' 

 

তিনি জানান, 'রোগীর পরিবারের লোকেদের তাঁর সমস্যার কথা জানতে চাইলে তাঁরা শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যাথা হচ্ছে বলে আমাদের জানান। সেই সময় আমরা রোগীর বাড়ির লোকেদের হাসপাতালের টিকিট করতে বলি এবং ওই রোগীকে অক্সিজেন দিতে থাকি। এর পাশাপাশি রোগীর সুচিকিৎসার জন্য বাকি পরিজনদের জায়গাটি ফাঁকা করে দিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়।'

 

এই সময় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ওয়ার্ডের মধ্যে হইচই জুড়ে দেন ওই রোগীর সঙ্গে থাকা তাঁর পরিজনরা। শুক্লা সিনহা বলেন, 'সেই সময় হঠাৎ করেই কয়েকজন মহিলা জুনিয়র নার্সদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করতে শুরু করেন। নার্সরা ভয় পেয়ে ওয়ার্ড ছেড়ে নিজেদের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলে মহিলারা সেই ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁদেরকে সেখান থেকে বের করে শারীরিকভাবে নিগ্রহ এবং মারধর করেন। এর পাশাপাশি ওয়ার্ডে থাকা চিকিৎসার বিভিন্ন নথি এবং খাতাপত্র তাঁরা ফেলে দেন। '

 

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডাঃ অভিক দাস বলেন, 'অত্যন্ত নিন্দনীয় এই ঘটনা। এই সমস্ত ঘটনার মাধ্যমে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিষেবা ব্যাহত করার চেষ্টা হয়েছে। আমরা আশা করব এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'