আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তির সামনে চটুল গানের তালে নাচের রিলস ভাইরাল হতেই তীব্র ক্ষোভ ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের তেমাথানি এলাকায়। অভিযোগ, ওই মূর্তিগুলির সামনে কোমর দুলিয়ে নাচের ভিডিও তৈরি করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা বহু মানুষের কাছেই আপত্তিকর ও অবমাননাকর বলেই মনে হয়েছে।
তেমাথানি বাজার চত্বরে সৌন্দর্যায়নের অংশ হিসেবে দেশের ১৬ জন বিশিষ্ট মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা, বীরসা মুন্ডা, রঘুনাথ মুর্মু-সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানসরঞ্জন ভূঁইয়ার উদ্যোগেই এই সৌন্দর্যায়নের কাজ সম্পন্ন হয়।
কিন্তু সম্প্রতি ওই মূর্তিগুলির সামনে একাধিক মহিলার ‘অশ্লীল নাচের’ রিলস প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় বিতর্ক। ভিডিওগুলি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিষয়টি নজরে আসে বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়ার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ধরনের ভিডিও জাতীয় স্তরের মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করছে এবং সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত তৎপরতা দেখান মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। তাঁর নির্দেশে ইতিমধ্যেই মূর্তিগুলির সামনে একটি সতর্কতামূলক নোটিশ টাঙানো হয়েছে। সেখানে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, মনীষীদের মূর্তির সামনে কোনও ধরনের রিলস বা ভিডিও শ্যুট করা যাবে না। ভবিষ্যতে এই নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বলেন, “সবং-এর তেমাথানি এলাকাকে আগমনী দ্বার বলা হয়। ওই বাজারে পিডব্লুডি রাস্তার মাঝখানে জাতীয় স্তরের নেতৃত্ব ও মনীষীদের মূর্তি বসানো হয়েছে। লক্ষ্য করেছি, সেখানে কিছু ছেলে-মেয়ে রিলস তৈরির নামে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করছে। যা এই মনীষী ও নেতৃত্বের প্রতি অশ্রদ্ধার সামিল। বিষয়টি সকলেরই খারাপ লেগেছে। তাই স্থানীয় মানুষজন ও বাজার কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনও অশালীন রিলস তৈরি না হয়। এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। আশা করি এলাকার যুবক, ছাত্র, শিক্ষক-শিক্ষিকা, মা-বোন, শ্রমিক, কৃষক ও ব্যবসায়ী সকলেই এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবেন এবং দেশের মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাবেন।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সামাজিক শালীনতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এমন ঐতিহাসিক ও শ্রদ্ধেয় স্থানে সকলেরই সংযত ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা উচিত। এমনটাই মত স্থানীয়দের।
