আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের পরিবারিক বিবাদের জেরে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড জলপাইগুড়িতে। জুন মাসের আবার জুলাইয়ে। স্ত্রীর সঙ্গে নিত্যদিনের ঝামেলা। মানসিক চাপে চরম পদক্ষেপ করলেন স্বামী। স্ত্রীকে খুন করে, আত্মঘাতী হলেন তিনি। ঘটনার নেপথ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। বাবা-মায়ের চরম পরিণতিতে শিউরে উঠেছে তাঁদের তিন সন্তান। স্থানীয়রাও এই ঘটনায় হতবাক। 

সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘিরে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খুঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গদাধর ক্যানেল এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চলছিল পারিবারিক অশান্তি। পারস্পরিক সন্দেহের বশেই দু'জনে নিত্যদিন অশান্তি করতেন। 

গতকাল, মঙ্গলবার রাতে স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। অন্য ঘরে ঘুমিয়ে ছিল তাঁদের তিন সন্তান। সকালে মা-বাবাকে ডাকতে গিয়ে চরম আতঙ্কের মুখোমুখি হয় সন্তানরা। খড়ের নিচ থেকে উদ্ধার হয় দু'জনের নিথর দেহ। 

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে খুন করেন। এরপর নিজের ঘরের ভেতর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। 

আরও পড়ুন: যমজ ভাইয়ের সঙ্গে প্রেম, উদ্দাম যৌনতা! ৫৫ বছরের মহিলা বললেন, 'প্রতিটা রাত ছিল 'থেরাপি'র মতো'

মৃতদেহ দু'টি উদ্ধার করে ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে।এলাকার বাসিন্দাদের মতে, এই ঘটনা পুরোপুরি সন্দেহ থেকেই জন্ম নিয়েছে। পারিবারিক অশান্তি এবং মানসিক চাপে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই ব্যক্তি বলে অনুমান। 

প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে জলপাইগুড়ির ব্রহ্মপুর এলাকায় বাড়ির ভিতর মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল ময়নাগুড়িতে। ঝোপঝাড় থেকে বাইক উদ্ধার ঘিরেই প্রথমে হয় শুরু হয় গুঞ্জন। এরপর একে একে রহস্য উদঘাটন শুরু করে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ। কীভাবে খুন করা হয়েছে, তা ঘিরেও চলছে তদন্ত। 

পুলিশ জানিয়েছিল, নাইলনের দড়ি দিয়ে হাত-পা বাধা এবং মাথায় ও মুখে ধারালো অস্ত্রের দাগ রয়েছে মৃত যুবকের দেহে। ময়নাগুড়ি ব্লকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে উঠে আসছে আরও একাধিক তথ্য। যদিও অভিযুক্ত পরিমল রায় এবং তাঁর স্ত্রী পলাতক ছিলেন ঘটনার পর। 

পেশায় রাজমিস্ত্রি পরিমল রায় থাকতেন অসমে। ঘটনার দিন কয়েক আগে পরিমল বাড়িতে এসেছিলেন। পরিমলের বাড়িতে গৌতমের যাতায়াত ছিল বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সুত্রে। তবে ঠিক কী কারণে খুন, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরিমলের বাড়িতে একাধিকবার গৌতমকে দেখা গিয়েছিল পরিমলের স্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে। এদিকে গৌতমের পরিবারের তরফে দাবি, টাকাপয়সা লেনদেনের বিষয় ছিল পরিমলের সঙ্গে।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাবলু রায়ের দাবি, পরিমলের স্ত্রীর সঙ্গে গৌতমের সর্ম্পক ছিল বলে মনে হচ্ছ। যার জেরেই এই ঘটনা হতে পারে। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছয় ফরেন্সিক টিম। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। এক্ষেত্রে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কটির বিষয়টিই জোরালো হয়েছিল। কিন্তু খুঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গদাধর ক্যানেল এলাকার হত্যাকাণ্ডে কী কারণে স্ত্রীর উপর স্বামীর সন্দেহ হত, তা এখনও জানা যায়নি।