আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন দীঘার সমুদ্রতটের স্নানঘাট জুড়ে সবুজ কার্পেট পাতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই সবুজ আস্তরণ কার্পেট নয়, বিপজ্জনক শ্যাওলা। না জেনে বহু পর্যটক সেই শ্যাওলার ওপর দিয়ে হাঁটছেন, সেলফি তুলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন। এই শ্যাওলার ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট ঝিনুক, যেগুলি ব্লেডের মতো ধারালো। ফলে পড়ে গিয়ে মাথা, কোমর, হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত পাচ্ছেন পর্যটকরা। এর আগেও একাধিক ক্ষেত্রে এখানে আঘাত পেয়ে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে দিঘায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সেই ভিড়ের মধ্যেই এক নম্বর ঘাট, ব্লু ভিউ ঘাট-সহ একাধিক স্নানঘাটে শ্যাওলার ওপর হাঁটতে গিয়ে ও সেলফি তুলতে গিয়ে অন্তত দু’জন পর্যটক আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

সমুদ্রের ধারে জমে থাকা এই সবুজ শ্যাওলা কার্যত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও অবিলম্বে স্নানঘাটগুলি পরিষ্কার করার জোরালো দাবি উঠেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে জানিয়েছেন, বিষয়টি পুলিশের না হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানাচ্ছি। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বড়দিন উপলক্ষে রাজ্যের অন্যতম এই পর্যটনকেন্দ্রে উপচে পড়েছে পর্যটকদের ভিড়। সকাল থেকেই সমুদ্রতটে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গিয়েছে। পর্যটকরা কেউ সমুদ্রস্নানে মেতে উঠেছেন, আবার কাউকে সমুদ্রের ঢেউ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতেও দেখা গিয়েছে। অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ছবি তুলছেন এবং ছুটির আনন্দ উপভোগ করছেন।

এরই পাশাপাশি দিঘার জগন্নাথধামে গিয়ে ঠাকুর দর্শনও করছেন বহু পর্যটক। ধর্মীয় দর্শন ও পর্যটনের সমন্বয়ে এই দিনটি আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে। প্রশাসন সূত্র ও দিঘা হোটেলিয়ারস অ্যাসোসিয়েশন-এর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বড়দিনে দিঘায় সব মিলিয়ে প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ গাড়ি ও বাসে করে সকালবেলায় দিঘায় এসে সারাদিন বনভোজন ও পিকনিকের আনন্দ উপভোগ করছেন।

এই বিশেষ দিনে নিরাপত্তার দিকেও কড়া নজর দিয়েছে প্রশাসন। সৈকত এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে এবং ওয়াচ টাওয়ার থেকে সর্বক্ষণ নজরদারি চলছে, যাতে কোনো রকম অঘটনা না ঘটে। সমুদ্র বর্তমানে উত্তাল নয়, ফলে পর্যটকেরা স্বস্তিতে সময় কাটাতে পারছেন।
সব মিলিয়ে ক্রিসমাসের আনন্দ ও উদ্দীপনায় এদিন দিঘার পরিবেশ হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত।