আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছরের শেষ দিনে রোদ ঝলমলে আকাশে পাহাড় থেকে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে স্পষ্ট দেখা মিলল কাঞ্চনজঙ্ঘার ‘স্লিপিং বুদ্ধ’। দু’দিন পর আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় মন ভরে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন পর্যটকেরা। যদিও রোদের দেখা মিলেছে, তবুও কনকনে ঠান্ডা হাওয়া আগের মতোই জাঁকিয়ে রয়েছে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনে আনন্দে মেতেছেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটকেরা। তারই সঙ্গে পাহাড়ে তুষারপাতের পূর্বাভাসে নতুন বছরের শুরুতে উত্তরের পাহাড় ও সিকিমে উন্মাদনা তুঙ্গে।

বছরের শেষ লগ্নে শৈলরানি দার্জিলিং-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে পর্যটকের ঢল নেমেছে। দেরিতে শীত পড়লেও এখন জাঁকিয়ে ঠান্ডা শুরু হতেই পাহাড়মুখো হয়েছেন ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি থেকে শুরু করে দেশের নানা প্রান্তের মানুষ।

এসেছেন বিদেশিরাও। দার্জিলিং, কালিম্পং, সান্দাকফু, টুমলিং, টংলু- প্রায় সর্বত্রই তিল ধারণের জায়গা নেই। দার্জিলিং শহরের অধিকাংশ হোটেল কয়েকদিন ধরেই হাউসফুল। শুধু বড় হোটেল নয়, অফ-বিট এলাকার হোমস্টেগুলিতেও একই ছবি। সন্ধ্যা নামলেই ঠান্ডা উপভোগ করতে গরম দার্জিলিং চা, কফি ও পাহাড়ি মোমোয় মেতে উঠছেন পর্যটকরা। ম্যাল এলাকায় ভিড় চোখে পড়ার মতো, সেলফি ও রিল তৈরিতে ব্যস্ত সকলেই।

দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি সিকিমেও পর্যটকদের ঢল নেমেছে। গ্যাংটকের এমজি মার্গ পর্যটকে ঠাসা। বরফ দেখার আশায় অনেকেই ছুটছেন পাহাড়ের উঁচু এলাকায়। পাশাপাশি অফ-বিট গন্তব্যগুলিতেও বাড়ছে পর্যটকদের আগ্রহ।

সিকিম আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, ইংরেজি নববর্ষের আগে আকাশ পরিষ্কার থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তবে আগামী কয়েক দিনে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে আরও শীত বাড়বে।

দার্জিলিং ও সিকিমের হিল স্টেশনগুলিতে দু’-একদিনের মধ্যেই তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গ্যাংটকে ৬.৮ ডিগ্রি।

হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের যুগ্ম সম্পাদক তন্ময় গোস্বামী জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি। দার্জিলিং, গ্যাংটক, কালিম্পং, সান্দাকফু-সহ একাধিক এলাকায় আগামী কয়েক মাসের বুকিং কার্যত হাউসফুল।

রাজস্থান থেকে আগত পর্যটক অঙ্কিতা ডালমিয়া জানান, বহুদিনের ইচ্ছা ছিল দার্জিলিং ঘুরে দেখার। বাস্তবে এসে বুঝেছি, দার্জিলিং প্রত্যাশার থেকেও অনেক বেশি সুন্দর ও রোমাঞ্চকর। সব মিলিয়ে বছরের শেষে পর্যটকের ভিড়ে চাঙা উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটন শিল্প। হাসি ফুটেছে হোটেল, হোমস্টে ও পর্যটননির্ভর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের মুখে।