আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের ইক্যুইটি বাজার সম্প্রতি বড় ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষ করে আইটি শেয়ারের তীব্র পতন বাজারকে নীচের দিকে টেনে নিয়ে গেছে। এর মূল কারণ, মার্কিন সরকার এইচ-১বি ভিসার আবেদন ফি বাড়িয়ে এক লক্ষ মার্কিন ডলার করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এর ফলে ভারতীয় আইটি খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা এই অনিশ্চয়তার মাঝে সেপ্টেম্বর ২০২৫ মাসেই প্রায় ৭৯.৪৫ বিলিয়ন টাকা ভারতীয় শেয়ার থেকে তুলে নিয়েছেন। এর ফলে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ১,৩৮০ বিলিয়ন টাকার নেট আউটফ্লো হয়েছে। বিশ্বের বর্তমান ঝুঁকির পরিবেশ, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি বাজারের মনোভাবকে নেতিবাচক করছে।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে শাড়ি চুরির অভিযোগে মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধর, ছবি দেখে সর্বত্র শোরগোল
মাল্টি-ক্যাপ ফান্ড:
মাল্টি-ক্যাপ ফান্ডে বিনিয়োগ করলে বড়, মাঝারি ও ছোট—সব ধরনের শেয়ারে অংশ নেওয়া যায়। ফলে কোনও একটি খাতে বড় ঝুঁকি থাকলেও অন্য খাত বা বাজার-আকার সেই ঝুঁকি সামাল দিতে সাহায্য করে। এই বৈচিত্র্যময় কৌশল বাজারের ওঠানামার মধ্যে স্থিতিশীলতা আনে এবং দীর্ঘমেয়াদে বৃদ্ধির সম্ভাবনা বজায় রাখে।
এসআইপি-র মাধ্যমে নিয়মিত বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারী বাজারের উত্থান-পতন মসৃণভাবে অতিক্রম করতে পারেন। মাসে মাত্র ১০,০০০ টাকা এসআইপি করলে দীর্ঘমেয়াদে উল্লেখযোগ্য সম্পদ গড়ে ওঠে।
নির্বাচিত ৩টি মাল্টি-ক্যাপ ফান্ড
Axis Multi Cap Fund
অ্যাক্সিস মাল্টি ক্যাপ ফান্ড ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করেছে। গত তিন বছরে এর রোলিং সিএজিআর (CAGR) হয়েছে প্রায় ২৪.১৮%। ফান্ডটির সম্পদ বর্তমানে ৮৩.২৯ বিলিয়ন টাকা। পোর্টফোলিওর ৪৬.৯৫% বড় কোম্পানিতে, ২৬.১৮% মাঝারি এবং ২৪.৩৮% ছোট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
Nippon India Multi Cap Fund
২০০৫ সালে চালু হওয়া নিপ্পন ইন্ডিয়া মাল্টি ক্যাপ ফান্ড গত ৩-৫ বছরে যথাক্রমে ২২.৬% ও ২৫.৫১% রোলিং সিএজিআর প্রদান করেছে। ফান্ডটির সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ৪৬২.১৬ বিলিয়ন টাকা। এর শক্তি হলো গবেষণা-ভিত্তিক স্টক নির্বাচন এবং দীর্ঘমেয়াদি রেকর্ড।
ICICI Prudential Multi Cap Fund
১৯৯৪ সালে চালু হওয়া এই ফান্ডের বৈশিষ্ট্য হলো সক্রিয় বিনিয়োগ কৌশল। এটি বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী বড়, মাঝারি ও ছোট কোম্পানির মধ্যে বিনিয়োগের অনুপাত বদলায়। গত ৩ থেকে ৫ বছরে এর রোলিং সিএজিআর যথাক্রমে ১৯.৮৬% ও ২০.৮৫%। পোর্টফোলিওর মূল অংশে রয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাংক (৫.৪৮%), রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (৩.৩৬%) এবং ইনফোসিস (৩.৩৫%)। সেক্টরভিত্তিকভাবে ব্যাংকিং, কেমিক্যাল এবং হেলথকেয়ারে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় শেয়ারবাজার এখন ওঠানামার মধ্যে রয়েছে। আইটি শেয়ারের ধস বাজারকে নীচে নামালেও অবকাঠামো ও জ্বালানি খাত দৃঢ় রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মাল্টি-ক্যাপ ফান্ড বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান। এসআইপির মাধ্যমে শৃঙ্খলাবদ্ধ বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ তৈরিতে সাহায্য করে, পাশাপাশি ঝুঁকি কমায়। বর্তমান অস্থির বাজারে মাল্টি-ক্যাপ ফান্ডকে পোর্টফোলিওতে অন্তর্ভুক্ত করা বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য পূরণে কার্যকরী কৌশল হতে পারে।
