আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০১৩ সালের এক বিচিত্র ঘটনাই আবারও ২০২৫ সালে সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ডেট্রয়েটের কুখ্যাত নাইটক্লাব ব্যবসায়ী অ্যালান মার্কোভিৎস সেই সময় প্রাক্তন স্ত্রী ও তার নতুন সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করে নিজের বাড়ির আঙিনায় স্থাপন করেছিলেন এক বিরাট মধ্যমা প্রদর্শনকারী ভাস্কর্য।
ঘটনাটি ঘটে যখন মার্কোভিৎস জানতে পারেন যে তার প্রাক্তন স্ত্রী এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এরপরই তিনি প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়ির একেবারে পাশের বাড়িটি কিনে ফেলেন। কিন্তু চমক এখানেই শেষ নয়— সেই বাড়ির পেছনের বাগানে তিনি স্থাপন করেন প্রায় ১২ ফুট উঁচু ব্রোঞ্জের তৈরি এক “মধ্যমা” ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটির দিকে রাতে-দিনে স্পটলাইট ফেলা হতো, যাতে সেটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান থাকে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে মার্কোভিৎস দাবি করেছিলেন, এই ভাস্কর্য আসলে প্রাক্তন স্ত্রীকে নয়, বরং তার নতুন সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করেই বানানো। তার ভাষায়, “আমি ওর (স্ত্রীর) ব্যাপারে অনেক আগেই শেষ করেছি। এটা ওর নতুন লোকটার জন্য। সে একজন পুরুষ হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি।”
ভাস্কর্যটির খরচ পড়েছিল প্রায় ৭,০০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় টাকায় প্রায় ৬.১ লাখ)। এর ছবি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় যখন মার্কোভিৎসের প্রাক্তন স্ত্রীর মেয়ে বলে পরিচিত লেনকা টুহি একে টুইটারে পোস্ট করেন। তিনি লিখেছিলেন, “কতটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হলে কেউ প্রাক্তন স্ত্রীর পাশের বাড়ি কিনে তারপর এ রকম ভাস্কর্য বসাতে পারে! দারুণ ভদ্রতা, অ্যালান।”
আরও পড়ুন: গাড়ির ভেতরে যৌনতার ঝড়! স্ত্রীর পরকীয়া ফাঁস, ভিডিও ভাইরাল করে দিলেন স্বামী!
মার্কোভিৎস সেই সময় ডেট্রয়েটে তিনটি স্ট্রিপ ক্লাবের মালিক ছিলেন। এর আগে তিনি নিজের আত্মজীবনীমূলক বই “টপলেস প্রফেট: দ্য ট্রু স্টোরি অব আমেরিকা’স মোস্ট সাকসেসফুল জেন্টলম্যান’স ক্লাব অনট্রাপ্রেনর” প্রকাশ করেছিলেন, যা জনপ্রিয়তা পায় এবং পরে তার জীবনের ওপর ভিত্তি করে এইচবিও একটি রিয়্যালিটি শোও নির্মাণ করে।
তিনি দাবি করেছিলেন, বাড়িটি কেনা পুরোপুরিই কাকতালীয়— রিয়েলটর তাঁকে যে বাড়িটি দেখিয়েছিলেন সেটিই প্রাক্তন স্ত্রীর পাশেই পড়ে যায়। কিন্তু একবার জানার পর, তাঁর কথায়— “কর্মফল কাজ করে।” আজ, বারো বছর পরও ব্রোঞ্জের সেই মধ্যমা ডেট্রয়েটের ইতিহাসে এক কুখ্যাত প্রেম-বিচ্ছেদের প্রতীক হয়ে রয়েছে। ভালোবাসা, বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রতিশোধের অদ্ভুত মিশ্রণ এই ভাস্কর্যকে ঘিরে আবারও তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়াও উঠে এসেছে এই ঘটনায়। এক ব্যবহারকারীর মন্তব্য— “প্রেম ভাঙতে পারে, কিন্তু প্রতিহিংসা যে এত উঁচুতে থাকতে পারে, তা মার্কোভিৎস প্রমাণ করেছেন।” অন্য আরেকজন লিখেছেন— “প্রাক্তনকে উদ্দেশ্য করে এভাবে ব্রোঞ্জের মধ্যমা গড়া নিঃসন্দেহে বিশ্ব রেকর্ডের যোগ্য।” অদ্ভুত এই ভাস্কর্য আজও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু— যা ডেট্রয়েট শহরে প্রেম-ঘৃণার কাহিনির সবচেয়ে অস্বাভাবিক প্রতীক।
