হেঁচকি সাধারণত ক্ষণস্থায়ী সমস্যা। তবে এটি থামতে না চাইলে বেশ বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হেঁচকি হয় যখন ডায়াফ্রাম—যা বুক ও পেটের মাঝখানে থাকা পাতলা পেশি—অজান্তে সংকুচিত হয়। যদিও এটি বেশিরভাগ সময় ক্ষতিকর নয়, দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
বহু প্রাচীন ঘরোয়া পদ্ধতি হেঁচকি থামাতে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
হেঁচকি সাধারণত নিজের থেকেই থেমে যায়। তবে কিছু প্রাকৃতিক উপায় ডায়াফ্রামকে শান্ত করে এবং রিফ্লেক্স প্রক্রিয়াকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই থামিয়ে দিতে সক্ষম।
হেঁচকি বন্ধের ঘরোয়া টোটকা
লেবু এবং নুন
হেঁচকি কমানোর সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হল এক টুকরো লেবুর উপর সামান্য নুন ছিটিয়ে ধীরে ধীরে সেটিকে চোষা। লেবুর টক স্বাদ এবং নুনের ঝাঁঝ মিলে স্নায়ুকে বিভ্রান্ত করে, যা ডায়াফ্রাম নিয়ন্ত্রণ করে। এতে খুব কম সময়ে হেঁচকি থেমে যায়।
ঠান্ডা জল
অল্প অল্প করে ঠান্ডা জল খাওয়া আরেকটি প্রচলিত সমাধান। ঠান্ডা জল গলায় থাকা পেশিকে শিথিল করে, ফলে ডায়াফ্রামের খিঁচুনি কমে যায়। কিছু চিকিৎসক শ্বাস আটকে রেখে জলে চুমুক দেওয়ার পরামর্শ দেন, যা অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল
গভীর শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখা এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া ডায়াফ্রামকে রিসেট করতে সাহায্য করে। এভাবে তিন থেকে চারবার পুনরাবৃত্তি করলে স্থায়ী হেঁচকিও নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
চিনি
এক চামচ চিনি মুখে নিয়ে ধীরে ধীরে গলিয়ে খাওয়া আরেকটি পরীক্ষিত উপায়। হঠাৎ মিষ্টি স্বাদ স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, যা হেঁচকির চক্র ভেঙে দেয়। তবে বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই পদ্ধতি এড়ানোর পরামর্শ দেন।
দুধ এবং হলুদ
যাঁরা আরও শান্তিদায়ক উপায় চান, তাঁদের জন্য উষ্ণ দুধ এবং হলুদের মিশ্রণ উপযোগী। এক গ্লাস গরম দুধে আধা চামচ হলুদ মিশিয়ে খেলে পেট শান্ত হয় এবং ডায়াফ্রামে কোনো প্রদাহ থাকলে তা কমে যায়।
হেঁচকি সাধারণত স্বাভাবিক এবং সাময়িক একটি সমস্যা হলেও, অবিরাম চলতে থাকলে তা বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে। প্রাচীন ঘরোয়া টোটকা অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত উপশম দেয়, তবে প্রতিবারই এগুলো ভরসা করা উচিত নয়। যদি হেঁচকি নিয়মিত দেখা দেয় বা দীর্ঘ সময় ধরে কমে না, তবে শরীরের ভিতরে অন্য কোনো জটিলতা লুকিয়ে আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
