আজকাল ওযেবডেস্ক: ছদ্মবেশেও শেষরক্ষা হল না। লালকেল্লা থেকে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের হীরে খচিত সোনার কলসি চুরির অভিযোগে দিল্লি পুলিশ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রথমদিকে তন্ন-তন্ন করে খুঁজেও লাভ হচ্ছিল না। তারপর মূল অভিযুক্তের ইউপিআই পেমেন্ট প্রোফাইলে খুঁজে তার ছবি পাওয়ার পর সাফল্য পেয়েছে পুলিশ।

মূল অভিযুক্ত ভূষণ বর্মাকে উত্তর প্রদেশের হাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ধৃতের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম গলে যাওয়া সোনা-সহ হীরাে, রুবি এবং পান্না খচিত চুরি করা কলসিটিও উদ্ধার করেছে।

১৫ আগস্ট পার্কে অনুষ্ঠিত দশ দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান 'দশলক্ষণ মহাপর্ব' চলাকালীন এই চুরির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি জৈন পুরোহিতের ছদ্মবেশে মূল্যবান জিনিসপত্র ভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আয়োজকরা যখন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাগত জানানোর জন্য ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত ছিলেন তখনই চুরির ঘটনা ঘটে। আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার সময় মঞ্চ থেকে জিনিসপত্রগুলি হারিয়ে যেতে দেখা যায়।

এফআইআর অনুসারে চুরি হওয়া জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল একটি সোনার কলসি এবং প্রায় ৭৬০ গ্রাম ওজনের একটি সোনার নারকেল, এছাড়াও হীরে, পান্না এবং রুবি দিয়ে খচিত ১১৫ গ্রাম ছোট আকারের আরও একটি সোনার কলসি। জিনিসপত্রগুলি জৈন আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়, তাই সেগুলিকে পবিত্র বলে মনে করা হয়।

অভিযোহ পেয়েই তল্লাশিতে নামে পুলিশ। পুলিশ জানায় যে, সিসিটিভি ফুটেজ ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্ক্যান করার পরে ভার্মার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। স্পষ্ট ফ্রেমটি পেটিএম প্রোফাইল ছবির সঙ্গে মিলে যায়। সেখান থেকেই তদন্তকারীরা অভিযুক্তের ব্যক্তিগত তথ্য খুঁজে পেয়েছে। যদিও লিঙ্ক করা নম্বরটি নিষ্ক্রিয় ছিল। তাও পুলিশ অভিযুক্তের বর্তমান যোগাযোগ নম্বর ট্র্যাক করতে পেরেছিল এবং তাকে হাপুরে খুঁজে পায়।

পুলিশ জানিয়েছে, অন্য দুই সহ-অভিযুক্ত, গৌরব কুমার বর্মা এবং অঙ্কিত পাতিল, উভয়ই গাজিয়াবাদের হাপুরের বাসিন্দা। চুরি করা সোনা নেওয়া এবং গলানোর ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশের মতে, ভূষণ বর্মা চুরির পরিকল্পনা করেছিল এবং তা বাস্তবায়িত করে। অঙ্কিত পাতিল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিলে, চুরি করা জিনিসপত্র গলানোর এবং বিক্রি করার ব্যবস্থা করেছিল সে। গৌরব কুমার বর্মা গলানো সোনা এবং নগদ অর্থ পেয়েছিলেন।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজকরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, জৈন মন্দিরগুলিতে এর আগেও একই রকম চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রায়শই পুরোহিতের ছদ্মবেশে চোর ঢুকে চরি করে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন- ভাষার ভিত্তিতে কাউকে অনুপ্রবেশকারী বলা যায়! বাংলাদেশি ফেরানোর পদ্ধতি কী, কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট