আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবশেষে দীর্ঘ তদন্তের পর গুজরাটের ভদোদরায় গ্রেপ্তার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল কুখ্যাত ‘ব্যাট গ্যাংয়ের’ তিন সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই এই তিন ব্যক্তি দাগী আসামি ছিল। তাদের খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিশ। সূত্রের খবর, দিনে এরা বেলুন বিক্রেতা সেজে ঘুরত, আর রাতে বাড়ি ফাঁকা পেলেই চুরি করত। গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন নাবালকও রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই চোরেদের চক্র স্কুল ব্যাগে রাখত চুরির সরঞ্জাম। শুধু তাই নয়, চুরির সময় এরা পরিচয় গোপন রাখতে কেবল অন্তর্বাস ও গেঞ্জি পরে কাজ করত। সম্প্রতি মঞ্জলপুর ও মকরপুরা এলাকায় একের পর এক চুরির ঘটনায় নজরদারি চালায় পুলিশ।

রাতভর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ও টহলদারির সময় সুসান সার্কেলের কাছে দু’জনকে সন্দেহজনক অবস্থায় আটক করা হয়। তাদের স্কুল ব্যাগ তল্লাশি চালিয়েই মেলে লোহার রড কাটার, তালা ভাঙার, নাট-বল্টু খোলার সরঞ্জাম ও গুলতি। পুলিশি জেরায় অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে, ব্যাট গ্যাং অত্যন্ত সংগঠিতভাবে কাজ করে। দিনের বেলায় গ্যাংয়ের একদল সদস্য বেলুন বিক্রির অজুহাতে আশেপাশের এলাকা ঘুরে ঘুরে ফাঁকা বাড়ি চিহ্নিত করে রাখত। সেই খবর পৌঁছে যেত গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের কাছে। রাতেও চুরির কাজ হত অত্যন্ত সংগঠিত ভাবে। একদল চুরি করত, অন্য আর একটি দল বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করত। সেই দলের সদস্যরা চুরি করা জিনিস নিয়ে পালিয়ে যেত। এতে পুরো গ্যাং একসঙ্গে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকত।

আরও পড়ুন: হুঁশ ফিরল ১৯ মৃত্যুর পর! বিক্ষোভকারীদের কাছে নতিস্বীকার, সোশ্যাল মিডিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল নেপাল

পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেপ্তার তিনজনের নাম দেবরাজ সোলাঙ্কি, কবীর সোলাঙ্কি ও আর একজন নাবালক। তারা ভদোদরার চারটি এলাকায় চুরির কথা স্বীকার করেছে। বর্তমানে অভিযুক্তদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্যাংটির চারজন সদস্য এখনও পলাতক। তদন্তে আরও জানা গেছে, এই গ্যাংটি আসলে মধ্যপ্রদেশ থেকে এসেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা এমনকি পুলিশকে হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হল, এই গ্যাংয়ের নাম ব্যাট গ্যাং। তার কারণ, এই গ্যাংয়ের অধিকাংশ সদস্যের বুকে আঁকা রয়েছে বাদুড়ের ট্যাটু। যাতে সদস্যদের সহজেই চিহ্নিত করতে পারা যায়। তিন অভিযুক্তকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের খোঁজে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ভদোদরা পুলিশ।

সম্প্রতি, নাসিকের মালেগাঁওয়ে দাপট বেড়েছিল আন্ডারওয়্যার গ্যাংয়ের। কয়েকদিন আগে গভীর রাতে একটি মালেগাঁওয়ের একটি বাড়িতে ঢুকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সোনা এবং কলা চুরি করেছে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা মূলত অন্তর্বাস পরে চুরি করতে বেরোয় গভীর রাতে। সেরকমই অন্তর্বাস পরা গ্যাংয়ের চার সদস্যকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে কলেজে প্রবেশ করার সময়।

দেখা গিয়েছে, একজন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন। মহারাষ্ট্রের একাধিক অঞ্চলে এই আন্ডারওয়্যার গ্যাংকে চাড্ডি বানিয়ান গ্যাং বলা হয়ে থাকে। ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করাই এই গ্যাংয়ের উদ্দেশ্য। তবে এই ধরনের ডাকাতির সঙ্গে একাধিক গোষ্ঠী সংযুক্ত কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। আন্ডারওয়্যার গ্যাংয়ের দাপট বাড়ার আগে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গাউন গ্যাং। মূলত মহিলাদের পোশাক গাউন পরে ডাকাতি করত এই গাউন গ্যাং। আবার মালেগাঁওয়ের আবাসিক এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িতে হানা দিয়েছিল এই গাউন গ্যাং। তাদের বিরুদ্ধে মন্দিরের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। ডাকাতির বাড়বাড়ন্তে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা চুরির লাগাম টানতে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের দাবি করছেন।