আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবার স্বমহিমায় ফিরলেন বীরভূমের দোর্দন্ড প্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার বীরভূমে দলের কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। এরপরেই তাঁকে কোর কমিটির কনভেনার করা হয়েছে বলে সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জেলায় জেলায় দলের সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল সেখানে দেখা গিয়েছিল বীরভূম জেলায় দলের সভাপতি হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলের নাম নেই। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দল চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের কোর কমিটির উপরেই। যদিও সেই কোর কমিটির সদস্য হিসেবে অনুব্রতর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিল দল। অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দলের সাংসদদেরও কমিটিতে 'এক্স অফিসিও' হিসেবে রাখা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ঘাসফুল শিবিরের এই সিদ্ধান্তে বার্তা যায় বীরভূমের সকলের কাছেই, 'দলে কেউই অপরিহার্য নয়।' সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছিল, তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা ভেঙে পড়ে দলে অনুব্রতর অনুগামীরা।
এরইমধ্যে রবিবার বীরভূম সফরে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। সেখানে পৌঁছনোর পর জেলার অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান অনুব্রতও। এরপরেই একান্ত সাক্ষাৎকার হয় মমতা ও অনুব্রতর মধ্যে। সাক্ষাৎকার শেষে অনুব্রত বেরিয়ে যান। সংবাদ মাধ্যমের কোনো প্রশ্নেরই তিনি জবাব দেননি। তবে কিছু যে একটা হতে চলেছে সেটা বোঝা যায় যখন সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে অতিথিদের তালিকায় একেবারে এক নম্বরে অনুব্রতর নাম দেখা যায়। যদিও এই সভায় অনুব্রত এসেছিলেন WBSRDA-এর চেয়ারম্যান হিসেবে। কিন্তু মুখে মুখে শুরু হয় আলোচনা। তবে কি আবার অনুব্রত ফিরতে চলেছেন স্বমহিমায়। সোমবার দুপুরের পরেই যেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। কোর কমিটির কনভেনার করা হয় অনুব্রতকে।
বীরভূমে অনুব্রত বনাম কাজল শেখের দ্বন্দ অনেকের কাছেই চর্চার বিষয়। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এদিনের কোর কমিটির বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন সকলকে একসঙ্গে চলতে হবে। অন্তর্দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না।
কখনও চরাম চরাম, আবার কখনও গুড় বাতাসা, রাজ্য রাজনীতিতে অনুব্রতর এই ধরনের কথা সকলের কাছেই চর্চার বিষয়। এর জন্য বারবার তাঁকে বিঁধেছেন বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। এর আগে গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিহার জেলে বন্দি ছিলেন অনুব্রত। আপাতত জামিনে মুক্ত আছেন। উল্লেখ্য, জেলবন্দি থাকার সময়েও অনুব্রতকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরায়নি তৃণমূল। সম্প্রতি, তাঁর সঙ্গে স্থানীয় এক পুলিশ আধিকারিকের বাক্যালাপ সামনে আসার পর দলের তরফে তাঁকে ভৎর্সনা করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস পরিষ্কার জানিয়ে দেয় অনুব্রতর এই বক্তব্য দল কোনোভাবেই সমর্থন করে না। গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবস ছিল। জেলা থেকে সেই সভায় যোগ দিতে আসেন অনুব্রত। কিন্তু রটে যায় তাঁকে নাকি মূল মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি। কৌতূহল সৃষ্টি হয়, তবে কি অনুব্রতর সঙ্গে দল দূরত্ব তৈরি করছে? যদিও সব জল্পনার অবসান ঘটল সোমবার। যেখানে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে কোর কমিটির কনভেনার করে তৃণমূল বুঝিয়ে দিল এখনও অনুব্রতর উপর দলের ভরসা অটুট।
