আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি।’ এক সময় এই কবিতা অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তুলত কচিকাঁচারা। কিন্তু দিন কাল পাল্টে গিয়েছে। পাল্টে গিয়েছে আদব কায়দাও। বহু বাবা মা অভিযোগ করেন, বাচ্চা একেবারেই কথা শোনে না। কিন্তু প্রশ্ন হল রোজ সকালে উঠে সন্তানকে নিয়মানুবর্তিতার পাঠ পড়ানোর দায়িত্ব কি প্রত্যেক বাবা মা পালন করেন? সন্তানের জীবনে কিছু ভাল অভ্যাস তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা তাদের শারীরিক, মানসিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশে সাহায্য করে। বাবা-মায়ের উচিত ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাসগুলো তাদের সন্তানদের মধ্যে গড়ে তোলা। রোজ সকালে উঠে এমন কিছু কাজ করতে শেখানো যা তাঁদের সারাজীবন মনে থাকবে।
আরও পড়ুন: ৮৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকে বসেও ফের অকৃতকার্য! ইনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক স্কুলছাত্র
১.  নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা: প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়িকে বা সারকাডিয়ান চক্রকে ঠিক রাখে। এর ফলে ঘুমের অভাবজনিত ক্লান্তি কমে, মনোযোগ বাড়ে এবং শরীর সুস্থ থাকে। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের একটি রুটিন তৈরি করতে সাহায্য করা এবং সেই অনুযায়ী ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করানো। ছুটির দিনে সামান্য ছাড় দেওয়া যেতে পারে, তবে যেন তা নিয়মিত না হয়। এতে শারীরিক ভাবেও চনমনে থাকবে সন্তান। ইস্কুলে যেতেও দেরি হবে না।
২.  ঘুম থেকে উঠেই বিছানা গোছানো: ঘুম থেকে ওঠার পর নিজের বিছানা নিজে গুছিয়ে রাখা আপাততুচ্ছ কাজ মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি নিয়মানুবর্তিতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া এই ধরনের ছোট ছোট অভ্যাস অবচেতনে শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং পরিপাটি থাকার অভ্যাস তৈরি করে। এতে দিনের শুরুটা সুশৃঙ্খল হয়। নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাসও তৈরি হয়।
৩.  মুখ ধোয়া ও দাঁত ব্রাশ করা: ঘুম থেকে উঠে মুখ ধোয়া এবং দাঁত ব্রাশ করা স্বাস্থ্যকর জীবনের প্রাথমিক পদক্ষেপ। এটি মুখ ও দাঁতের জীবাণু দূর করে। অনেক শিশুই এখন ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল তুলে নেয় হাতে। মোবাইলের বদলে সন্তানের হাতে খবরের কাগজ তুলে দিন। এতে পড়ার অভ্যাস তৈরি হবে। পড়ার বইয়ের বাইরেও জগতকে জানতে পারবে সন্তান। দাঁত না মেজে কোনও মতেই অন্য কোনও দিকে যাতে নজর না দেয় সন্তান সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৪.  শরীরচর্চা করা: দাঁত মাজা হয়ে গেলে কিছুক্ষণ হালকা ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপ করান সন্তানকে। এই অভ্যাস শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, মনকে সতেজ করে। সন্তানকে একা না ছেড়ে নিজেরাও যোগাভ্যাস, হালকা দৌড়ানো, লাফানো বা অন্য কোনও খেলাধুলো করতে পারেন সন্তানের সঙ্গে। এতে বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানের যোগসূত্র মজবুত হয়।
৫.  স্বাস্থ্যকর জলখাবার: সকালের জলখাবার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এটি শিশুদের শরীরে দিনের শুরুতে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায় এবং তাদের মনোযোগ ও শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সন্তানদের জন্য পুষ্টিকর জলখাবারের ব্যবস্থা করুন এবং তাদের সেই খাবার খাওয়ান। সকালের পাতে ফাস্ট ফুড বা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।