আজকাল ওয়েবডেস্ক: ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন হয়েছে। আবার তিন নম্বরে ফেরানো হয়েছে সাই সুদর্শনকে। বাদ পড়েন করুণ নায়ার। কামব্যাক বয়কে তিন নম্বরে নামানো নিয়ে এবার প্রশ্ন তুললেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চলতি অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফিতে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্টে করুণকে তিনে নামানোর কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না প্রাক্তন তারকা স্পিনার। তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত ট্যাকটিক্যাল ভুল। যার প্রভাব করুণের মাইন্ডসেটে পড়েছে। কারণ এর আগে এই পজিশনে কোনওদিন ব্যাট করেননি তিনি। অশ্বিন বলেন, 'করুণ নায়ার কোনওদিন তিন নম্বরে খেলেনি। তাঁকে তিনে খেলিয়ে ওর মাইন্ডসেট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।' নিজের ইউ টিউব চ্যানেলে এমনই দাবি করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
হেডিংলিতে প্রথম টেস্টে ছয় নম্বরে ব্যাট করার পর, দ্বিতীয় টেস্টে তিনে নামানো হয় তাঁকে। কিন্তু এই পজিশনে নেমে ডাহা ব্যর্থ হন। প্রথম তিন টেস্টেই রান পাননি। চতুর্থ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়েন। দুটো টেস্টে সুযোগ না পাওয়ার পর দলে ফেরেন সাই সুদর্শন। ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথম দিন ১৫১ বলে ৬১ রান করেন। সুদর্শনের ভূয়সী প্রশংসা করেন তারকা স্পিনার। অশ্বিন বলেন, 'সাই সুদর্শনকে কৃতিত্ব দিতে হবে। বাদ পড়ার পর দলে ফিরে অর্ধশতরান করা সহজ নয়। তারওপর ১-২ এ সিরিজে পিছিয়ে থাকার পর এইভাবে ব্যাট করা সহজ নয়। আমার মনে হয় তিন নম্বর স্থানটা ওরই হওয়া উচিত।'
তরুণ তারকার তুলনা রাহুল দ্রাবিড় এবং চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে করেন প্রাক্তন তারকা। তাঁর মানসিক জোরের প্রশংসা করেন। অশ্বিন বলেন, 'ও তিন নম্বরে স্থায়িত্ব দিচ্ছে। ও বিচার করে বল ছাড়ছে। বুদ্ধিদীপ্ত ক্রিকেটে রান করেছে। ও আউট হয়ে যাওয়ায় আমি দুঃখ পেয়েছি। আমি ওর শুভাকাঙ্ক্ষী। ও শতরান করতে পারত। দ্বিতীয় টেস্ট অনুযায়ী দারুণ খেলেছে। টেকনিক্যালি এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী। ওকে বাদ দেওয়ায় কোনও যুক্তি ছিল না।' দিনের শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ২৬৪। ক্রিজে অপরাজিত রবীন্দ্র জাদেজা এবং শার্দূল ঠাকুর। দু'জনেই ১৯ রানে ব্যাট করছে। পন্থ না নামতে পারলে, এই জুটির ওপরই নির্ভর করবে ভারতের ভাগ্য। এরপর ওয়াশিংটন সুন্দর ছাড়া কোনও অলরাউন্ডার বা বিশিষ্ট ব্যাটার নেই।
প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডের মাটিতে তিনটে টেস্টে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি করুণ নায়ার। তাসত্ত্বেও বাকি দুই টেস্টে কামব্যাক বয়কে সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মহম্মদ কাইফ। ভারত অধিনায়ক শুভমন গিল এবং হেড কোচ গৌতম গম্ভীরকে অনুরোধ করেন করুণের পাশে থাকার জন্য। আট বছর পর ভারতের টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করেন। ভাবা হয়েছিল, দু'হাতে এই সুযোগ লুফে নেবেন। কিন্তু রান পাননি। তিন টেস্টের ছয় ইনিংসে তাঁর স্কোর ০, ২০, ৩১, ২৬, ৪০ এবং ১৪। একটিও অর্ধশতরান নেই। দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। কাইফ আন্দাজ করছিলেন, এবার বাদ পড়তে পারেন করুণ। কারণ ম্যাচ হারলেই প্যানিক করতে শুরু করে দল। কাইফ বলেন, 'আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি। ম্যাচ হারলেই প্যানিক শুরু হয়ে যায়। জিতলে প্রথম একাদশে কোনও পরিবর্তন হয় না। প্রথম টেস্ট হারের পর দলে দুটো, তিনটে পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু বার্মিংহ্যামে জেতার পর, শুধুমাত্র যশপ্রীত বুমরা দলে ফেরে। বাকি কোনও পরিবর্তন হয়নি। এভাবেই চলে আসছে। আমার মনে হয়, তৃতীয় টেস্ট হারের পরও ম্যাঞ্চেস্টারে একই দল ধরে রাখা উচিত। করুণ নায়ার শুরুটা খারাপ করছে না। ৩০, ৪০ রান করছে। কিন্তু বড় রানে কনভার্ট করতে পারছে না। ওর আরও একটা সুযোগ পাওয়া উচিত। এটা শুভমন গিল এবং গৌতম গম্ভীরের পরীক্ষা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে লর্ডসে হেরেছে ভারত। তারপর কি প্যানিক করে দলে পরিবর্তন আনা হবে? নাকি প্লেয়ারদের ওপর ভরসা রাখা হবে?' কাইফের ধারণাই ঠিক হয়। ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে একাধিক পরিবর্তন হয় দলে।
