আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিনি বলতেই পারেন, আমি আমার মতো। সত্যিই তিনি তাঁর মতোই। আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের তুলনা তিনি নিজেই। তিনি মেজাজী। তিনি রাগী। তিনি শৃঙ্খলা পরায়ণ। তিনি হাসিখুশি। অহং-সর্বস্ব এক মানুষ।
তিনি আবার জলবৎ তরলং। তিনি সেই মোনালিসার হাসির মতোই। যেভাবে ব্যাখ্যা করবেন, তিনি তাই। তাঁর ফুটবলবোধও এই লাইনের মতোই সিম্পল। সহজ সরল। তাঁর জীবনের মতোই। জেতো, জেতো আর শুধুই জেতো। এক গোলে জিতলেও তিন পয়েন্ট। ছ' গোলেও তাই।
এহেন স্প্যানিশ কোচের কোচিংয়েই ইন্টার কাশী আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হল ইন্টার কাশীকে। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের রায় ধোপে টিকল না আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে।
আরও পড়ুন: 'ওর কাজ বল ছেড়ে দেওয়া ছিল না,' লর্ডসের ইনিংস নিয়ে জাদেজাকে কটাক্ষ ভারতের প্রাক্তন কোচের
এর আগে ফেডারেশন চার্চিল ব্রাদার্সকেই আই লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে গেল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের রায়ে। সঙ্গে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে বিরাট অঙ্কের জরিমানাও করেছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত।
সেই ঘোষণার পরই স্প্যানিশ কোচের দৃপ্ত ঘোষণা, ''ভারতের ফুটবল ইতিহাসে আমিই একমাত্র কোচ যিনি আইএসএল এবং আই লিগ জিতেছেন।'' শুধু কি তাই? তিনি তো লিগ-শিল্ডও জিতেছেন। এমন সফল বিদেশি কোচ কবে এসেছেন শিবঠাকুরের দেশে?
ফিনিক্স পাখির রয়েছে পুনর্জন্ম আর অমরত্বের বৈশিষ্ট্য। ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন প্রাণ পায়। ফিনিক্স পাখির কথাই স্মরণ করিয়ে দেন স্প্যানিশ মায়েস্ত্রো। প্রথমবার এটিকে-কে আইএসএল ট্রফি দিয়ে চলে গেলেন পুণেতে। বেশ কয়েকবছর পরে পুরনো ক্লাবে ফিরেই আবার চ্যাম্পিয়ন হলেন। পরের বার রানার্স। তার পর কী হল কে জানে! তিনি বিবাগী হয়ে সন্ন্যাস নিলেন। মরশুমের মাঝপথে তাঁর জায়গায় এলেন আরেক স্পেনীয়-হুয়ান ফেরান্দো।
ফেরান্দোর ছেড়ে যাওয়া সিংহাসনে বসেই মোহনবাগানের রিমোট কন্ট্রোল হাতে নিলেন। ফাইনালে তুললেন দলকে। তার আগে লিগ শিল্ড জিতলেন। এহেন হাবাস আবার আই লিগের দল ইন্টার কাশীকে চ্যাম্পিয়ন করলেন। তিনি যা ধরেন, তাতেই সোনা ফলান। অভিজ্ঞ স্প্য়ানিশ কোচ বলছেন, ''এটাই তো আমার কাজ।''
কিন্তু সব কোচই কি দলকে বলে বলে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেন? হাবাস পারেন। তাই তিনি সগর্বে বলেন, ''সব কোচের পক্ষে এটা করা সম্ভবই নয়।'' হাবাসের পক্ষে যা করা সম্ভব, তা অন্য কারওর পক্ষে অসম্ভব! অসম্ভবকে সম্ভব করেন বলেই তিনি আন্তোনিও লোপেজ হাবাস।
অনেক আগে তিনি একবার বলেছিলেন, ''আমার মতো সিভি আইএসএলে আর কার আছে? বলিভিয়াকে ৯৪ বিশ্বকাপে তুলেছি। বলিভিয়ার ক্লাবের হয়ে বলিভিয়াতে লিগ জিতেছি। আমেরিকান কাপ ৯৭-এ ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ফাইনালে খেলেছি। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও আমার সাফল্য রয়েছে। দুবার লা লিগা জিতেছি ভ্যালেন্সিয়া ক্লাবে রাফা বেনিতেজের প্রথম সহকারী হিসেবে। ভ্যালেন্সিয়া ক্লাবকে ট্রেনিং করিয়েছি। দু'বার আইএসএল খেতাব জিতেছি, একবার ফাইনালে উঠেছি, একবার সেমিফাইনাল।'' তখনও অবশ্য লিগ শিল্ড জেতেননি তিনি। আই লিগও নয়। সুনীল ছেত্রীদের হেডস্যর হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন তিনি। আবেদন করেছেন ভারতের কোচ হওয়ার জন্য।
কথায় বলে, নাথিং সাকসিডস লাইক সাকসেস। সাফল্যের চেয়ে বড় সফলতা আর কিছুতে নেই। হাবাসও তাই। সাফল্যই তাঁর অভিজ্ঞান। সাফল্য দিয়েই তাঁর পরিচিতি। তিনি এলেন, দেখলেন এবং জয় করে নিলেন।
আরও পড়ুন: তারকা ফুটবলারের বাড়িতে বড় ধরনের চুরি, ২০টি পদক-ট্রফি নিয়ে পালাল চোর
