আজকাল ওয়েবডেস্ক: একসময়ে ফ্রান্স নামটা উচ্চারণ করলেই এক নিঃশ্বাসে ফুটবলপাগলরা বলতেন, ''প্লাতিনি, তিগানা, রোসেতুফার্নান্দেজকে নিয়ে সোনায় বাঁধানো মাঝমাঠ।'' ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার মিশেল প্লাতিনির বাড়িতে বড় সড় চুরি হল। ফুটবল জীবনে অর্জিত একাধিক ট্রফি, পদক চুরি করে নিয়ে গিয়েছে চোর। প্রায় ২০টি ট্রফিমেডেল চুরি হয়ে গেল।

মার্সেইয়ের পূর্ব দিকের কাসিস প্লাতিনির ঠিকানা। চুরির সময় প্লাতিনি তাঁর বাড়িতেই ছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বাড়ির বাগানে শব্দ শুনে প্লাতিনি সেখানে যান। গিয়ে দেখেন এক ব্যক্তি জানালার ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেনপ্লাতিনি তাঁকে ধরার চেষ্টা করেও পারেননি। সেই ব্যক্তিই চোর।

বাগানের ভিতরে একটি ঘরে প্লাতিনি তাঁর ট্রফি ও পদক রেখেছিলেন। সেই ট্রফি ও পদক মিলিয়ে প্রায় ২০টি পুরস্কার চুরি করে নিয়ে গিয়েছে চোর। অনেক সকালে প্লাতিনির বাড়িতে চুরি হয়। ফ্রান্সের প্রাক্তন অধিনায়কের বাড়িতে এভাবে চুরির ঘটনায় নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। তদন্তে নেমেছে মার্সেইয়ের আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: টেস্টে ব্রেকের সময় কী খান ক্রিকেটাররা? মেনুতে কী থাকে, খোলসা করলেন পোপ

প্লাতিনি নামটা উচ্চারিত হলেই সুদর্শন এক ফুটবলারের কথা মনে পড়ে ফুটবলপাগলদের। কে ভুলতে পারবেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ব্রাজিল-ফ্রান্স ম্যাচ। ১৯৮৪ সালের ইউরোজয়ী প্লাতিনি। তিনি আবার উয়েফার প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৩, ১৯৮৪ এবং ১৯৮৫ সালের ব্যালন ডি অর-জয়ী ফ্রান্সের এই সুপারস্টার

Former UEFA President Michel Platini leaves the tribunal after he got acquitted on corruption charges against him in Muttenz

ইতালির জুভেন্তাসে খেলতেন প্লাতিনি। ১৯৮৫ সালে জুভেন্টাসের জার্সিতে ইউরোপিয়ান কাপ জেতেন। ফ্রান্সে জাতীয় দলের জার্সিতে ৭২টি ম্যাচে ৪১টি গোল করেছেন প্লাতিনি। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও খেলেছেন।

এহেন প্লাতিনি আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছিলেন। ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত উয়েফার সভাপতি পদে ছিলেন তিনি। ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটারের সঙ্গে জড়িয়েছিল তাঁর প্লাতিনির নামও। চলতি বছরের মার্চে সেই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় প্লাতিনিকে। আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে আট বছরের জন্য নির্বাসিত হয়েছিলেন প্লাতিনি

ফুটবলার প্লাতিনি অবশ্য অনেক উঁচুদরের ছিলেন। মারাদোনা, জিকো আর প্লাতিনির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখেছে ইতালির ফুটবল। জিকো ছিলেন উদিনেসের ফুটবলারপ্লাতিনি জুভেন্তাস। আর মারাদোনা নাপোলির। তিনটি ভিন্ন ফুটবল দর্শন থেকে এলেও মাঠে তাদের দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের প্রশংসা ছিল সর্বত্র। প্লাতিনি-মারাদোনা ও জিকোর লড়াই ইতালির লিগের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছিল বহুগুণে। 

undefined

১৯৮২ তে জুভেন্তাসে যোগ দেওয়ার আগে প্লাতিনি খেলেছেন দুটো ফরাসি ক্লাবে। তাঁর শৈশবের ক্লাব ন্যান্সিতে খেলেন প্রায় সাত বছর। জুভেন্টাসে প্লাতিনি খেলেছেন পাঁচ বছর। তিন-তিনবার ব্যালন ডি অর জিতে নেন প্লাতিনি। ১৯৮৪ এবং ৮৬-তে জুভেন্তাসের লিগ খেতাব জয়ের নায়ক ছিলেন প্লাতিনিতুরিনের রাজা বলা হত প্লাতিনিকে। 

এই দুর্দান্ত ফুটবলার সমাদৃত হয়েছেন গোটা বিশ্বে। তাঁর কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ 'নাইট অফ দ্য লিজিয়ন অফ অনার' সম্মানে ভূষিত করা হয় ১৯৮৫ সালে। ১৯৯৮ সালে অফিসার পদে উন্নীত হন প্লাতিনিবুট জোড়া তুলে রাখার পরই ফ্রান্সের সুপারস্টার ফুটবলার কোচিংয়ে মনোনিবেশ করেন। ১৯৮৮ সালে ফরাসি জাতীয় দলের কোচ হন প্লাতিনি।  সেই প্লাতিনির বাড়িতে এদিন খুব সকালে বড় ধরনের চুরি হয়ে গেল। অমূল্য সব ট্রফি-পদক হাতিয়ে নিয়ে চলে গেল চোর। 

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 18, 2025

আরও পড়ুন: ভারত-ইংল্যান্ড সেরা একাদশ বাছলেন পূজারা, ব্রাত্য তিন ভারতীয় তারকা