আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার বিকেলে অরুণাচল প্রদেশে বছর ১৯ এর এক শ্রমিক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে জনতা। নাবালিকাদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। লোয়ার দিবাং ভ্যালি জেলার রোয়িং থানার বাইরে এই গণপিটুনির চলে। খবর অনুযায়ী অভিযুক্ত আসামের বাসিন্দা ছিল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে নিহত ব্যক্তি আসামের বাসিন্দা ছিল। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নাবালিকা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। লোয়ার দিবাং ভ্যালি জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) রিঙ্গু এনগুপোকের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ৫০০ জনেরও বেশি লোকের একটি জনতা থানায় হামলা চালায়। অভিযুক্তকে টেনে বের করে আনে তারা। এরপর তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে।

খবর অনুযায়ী, পুলিশি হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও পরিস্থিতি কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বরং জনতার আক্রশ বেড়েছে। জনতা তার উপর আক্রমণ করে। পুলিশ আরও জানায়, 'আমরা বৃহস্পতিবার রাতভর অভিযুক্তকে ধরার জন্য তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলাম. শুক্রবার সকালে কিছু স্থানীয় ব্যক্তি অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। শুক্রবার দুপুর আড়াইটে থেকে তিনটের দিকে, প্রায় ৫০০-৬০০ জন লোক রোয়িং থানার সামনে জড়ো হয়। এরপর তারা থানার গেট ভেঙে ফেলে'। লোয়ার দিবাং ভ্যালির পুলিশ সুপার রিঙ্গু এনগুপোক জানান, ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে POCSO আইনে মামলা চলছিল। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও হোস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তদন্ত চলছে।
খবর সূত্রে জানা যায়, জনতার আক্রমণের পর অভিযুক্ত গুরুতর আহত অবস্থায় জ্ঞান হারায়। পুলিশ আরও জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় অভিযুক্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগায় তার মৃত্যু হয়।
'আমরা জনতা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি, কিন্তু তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে থানা থেকে বের করে আনে। আহত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটবর্তী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সে তার আঘাতের কারণে মারা যায়,' এসপি এনগুপোক বলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন রোয়িং শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত থানা চত্বর এবং আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা ছিল।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ অনুমান করেছে, নিহত ব্যক্তি কমপক্ষে সাতজন স্কুলছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। আরও জানা গিয়েছে, যে স্কুলে মেয়েরা পড়াশোনা করত তার কাছে একটি নির্মাণাধীন ভবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত অভিযুক্ত। বর্তমানে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার পর্যবেক্ষণ জারি রয়েছে।
এ ধরনের গণপিটুনির ঘটনা এর আগেও রাজ্যের অন্যান্য অংশে ঘটেছে। ২০১৮ সালে তেজু শহরে এবং ২০১৫ সালে নাগাল্যান্ডের দিমাপুরে এমন ঘটনা দেশে আলোড়ন তুলেছিল।
