আজকাল ওয়েবডেস্ক: অফিসে বসের নেক নজরে পড়তে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুখ বুজে কাজ করে যান। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে কাজ তো করতেই হবে। কিন্তু তারও সীমা রয়েছে। অতিরিক্ত কাজ বা ওভার ওয়ার্ক শরীরের উপর নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে একটানা কাজ করলে শরীর ও মন উভয়েই ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।

১.  হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: অতিরিক্ত কাজের ফলে দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ তৈরি হয়, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদস্পন্দন অনিয়মিত করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত বেশি সময় ধরে কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। কাজের চাপ কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
২.  মারাত্মক মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা: কাজের অতিরিক্ত চাপ সরাসরি মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। এর ফলে উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ, মনোযোগের অভাব এবং দীর্ঘমেয়াদে বিষণ্ণতার মতো মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্রমাগত কাজের চাপে থাকলে ব্যক্তি নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতে পারে এবং তার সামাজিক জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও দুর্বল করে তোলে। অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং মানসিক উদ্বেগ, দ্বিমুখী চাপের প্রভাব পড়তে পারে যৌন জীবনেও। দেখা দিতে পারে লিঙ্গশিথিলতা।
৩.  ঘুমের সমস্যা: অতিরিক্ত কাজের চিন্তা ও চাপ ঘুমের স্বাভাবিক চক্রকে ব্যাহত করে। এর ফলে দেরিতে ঘুম আসা, ঘুমের মধ্যে বারবার জেগে ওঠা বা অপর্যাপ্ত ঘুমের মতো সমস্যা (ইনসমনিয়া) দেখা দেয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর সঠিকভাবে বিশ্রাম পায় না, ফলে দিনের বেলায় ক্লান্তি, কাজে অমনোযোগিতা এবং শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়।
৪.  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া: দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। কর্টিসল হরমোনের উচ্চমাত্রা রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর সহজে বিভিন্ন সংক্রমণ, যেমন - সর্দি, কাশি, ফ্লু এবং অন্যান্য জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে এবং অসুস্থতা থেকে সেরে উঠতেও বেশি সময় লাগে।