আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ বছর পর ডার্বির আগের দিন বিকেলে ময়দান জমজমাট। অনুশীলন, সাংবাদিক সম্মেলন, টিকিটের লাইন, সবই ছিল। আইএসএল শুরু হওয়ার পর থেকে সাধারণত যুবভারতীর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে প্রাক ডার্বি চূড়ান্ত প্রস্তুতি সারে দুই প্রধান। কিন্তু এবার চিত্রটা একটু অন্যরকম। মোহনবাগান তাঁদের প্রাক ম্যাচ প্রস্তুতি যুবভারতীতে সারলেও ঘরের মাঠে অনুশীলন করে ইস্টবেঙ্গল। যার ফলে রথ দেখা, কলা বেঁচা, দুটোই হয় লাল হলুদ সমর্থকদের। টিকিট কাটার পাশাপাশি প্রিয় দলের অনুশীলন দেখার জন্য ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। দুই দলই সাংবাদিক সম্মেলন নিজেদের ঘরের মাঠেই করে। কোচের সঙ্গে একমত শুভাশিস বসু। কোনও দলকেই ফেভারিট মানছেন না মোহনবাগানের অধিনায়ক। শুভাশিস বলেন, 'ডার্বিতে কেউ ফেভারিট হয় না। ফ্যানদের জন্য ফেভারিট। ওরা পছন্দের দলকেই সবসময় এগিয়ে রাখে। ইস্টবেঙ্গল শেষ কয়েকটা ম্যাচ না জিতলেও, ১০০ শতাংশ দেবে। ভাল লড়াই হবে। আমরা লিগ টেবিলের ওপরের দিকে ওঠার চেষ্টা করব। আমরা সব ম্যাচই জেতার জন্য খেলি। বিশেষ করে ডার্বি।'
বড় ম্যাচে প্রতিপক্ষ আনোয়ার। গত বছর একই দলের যোদ্ধা ছিলেন। এবার প্রান্ত বদল হয়েছে। আইনি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তারওপর মাঠের বাইরের লড়াইয়েও হাত মিলিয়েছে দুই প্রধানের সমর্থকরা। এই বিষয়গুলো ডার্বিতে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে? শুভাশিস বলেন, 'প্লেয়ার হিসেবে মাঠের খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। মাঠেই খেলা হবে। সেটারই প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। মাঠের বাইরে যাই হোক, ফোকাস ধরে রাখতে হবে। মাঠের বাইরের আওয়াজ যাতে কানে না আসে, সেই চেষ্টা করতে হবে।' মহমেডান ম্যাচ জেতায় মনোবল একলাফে দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই ডার্বির আগে হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন বাগান অধিনায়ক। শুভাশিস বলেন, 'কদিন আগেই শুনেছিলাম পিছিয়ে থাকা মোহনবাগান ভয়ঙ্কর। এখন শুনছি পিছিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল ভয়ঙ্কর। যে পিছিয়ে থাকবে সেই ভয়ঙ্কর। আমরা ভয়ঙ্কর হওয়ার চেষ্টা করব।' বাগানের বেশ কয়েকজন প্লেয়ার এবার ইস্টবেঙ্গলে নাম লিখিয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম রক্ষণের দুই স্তম্ভ আনোয়ার আলি এবং হেক্টর ইউস্তে। এই বিষয়টি কি পার্থক্য গড়ে দিতে করে? শুভাশিস বলেন, 'গত কয়েক বছরে অনেক প্লেয়ার মোহনবাগানে এসেছে। তারপর অন্য দলে গিয়ে খেলেছে। আমাদের দলে অনেক অভিজ্ঞ প্লেয়ার রয়েছে। আগের ম্যাচে রক্ষণে আমি, টম, আশিস, অ্যালবার্তো খেলেছে। শেষ ম্যাচে আমরা ক্লিনশিট রাখতে পেরেছি। এবছর কোচ আলাদা। প্ল্যান আলাদা। আগের কোচের প্ল্যান ওরা জানত। এবার অসুবিধা হবে না।'
মহমেডান ম্যাচে দাপুটে ফুটবলের পর লম্বা বিরতি। এই ব্রেক কি দলের ছন্দ নষ্ট করে দিতে পারে? তেমন মনে করছেন না বাগান অধিনায়ক। বরং, এর ইতিবাচক দিকটাই দেখছেন। শুভাশিস বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ হল আমরা জিতে শেষ করেছিলাম। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ভাল। মাঝের সময়টা দলের কম্বিনেশন গড়তে সাহায্য করবে। হাতে সময় পেয়ে যাওয়ায় আমরা আরও ভাল প্রস্তুতি নিতে পেরেছি।' দলে এমন পাঁচজন ফুটবলার রয়েছে যাদের ডার্বিতে হাতেখড়ি হবে। ওদের জন্য ডার্বি স্মরণীয় করে রাখতে চান শুভাশিস। ক্লিনশিট রাখাই প্রথম লক্ষ্য। তবে পাশাপাশি গোল করেও দলকে সাহায্য করতে চান বাগান অধিনায়ক।
