আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডার্বি জয়ের ৪৮ ঘণ্টাও কাটেনি। তারমধ্যে আরও একটি হাইভোল্টেজ ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করে দিল ইস্টবেঙ্গল। বুধবার রাতে শেষ চারে ডায়মন্ড হারবারের মুখোমুখি অস্কার ব্রুজোর দল। ময়দানি মিথ বলছে, ডার্বির পরের ম্যাচে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অতীতেও একাধিকবার এমন ঘটেছে। সেই বিষয়ে অবগত স্প্যানিশ কোচ। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, দলে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। তবে মেনে নিলেন, ডার্বি পরে কার্যত বিনা প্রস্তুতিতেই আরও একটি কঠিন ম্যাচে নামতে হবে। অস্কার বলেন, 'আমি জানি ডার্বির পরের ম্যাচ কঠিন হয়। শারীরিক এবং মানসিকভাবে, এমনকী এনার্জির দিক থেকে হয়তো আমরা একটু পিছিয়ে আছি। আজ ট্রেনিং শুরু করছি। প্লেয়ারদের চাপ দিতে পারব না। চাইব মোহনবাগান ম্যাচের মতো কাল ৯০ মিনিট প্লেয়াররা সেরাটা দিক। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। পারফরম্যান্স গ্রাফ নীচে নামার একটা ঝুঁকি থাকে। তবে আমরা সমস্ত দিক বিবেচনা করে, অঙ্ক কষে এগোচ্ছি। ডার্বি জয়ের পর টুর্নামেন্টে এগোনোর সুযোগ রয়েছে। আমরা ডায়মন্ড হারবারকে সমীহ করি। দলে একজন ভাল স্ট্রাইকার আছে। আইএসএলে খেলা কয়েকজন প্লেয়ার আছে। কোচও অভিজ্ঞ।' 

বিদেশিদের সংখ্যায় এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। বুধবার মাত্র দু'জন বিদেশি খেলাতে পারবে ডায়মন্ড হারবার। সেখানে রশিদ ছাড়া সম্ভবত সবাইকেই পাবেন অস্কার। তারওপর যুবভারতীতে ম্যাচ। পূর্ণ সমর্থন পাবে ইস্টবেঙ্গল। বর্তমান ফর্ম এবং পরিস্থিতির বিচারে খাতায় কলমে এগিয়ে লাল হলুদ। নিজেদের কি ফেভারিট মানছেন? একেবারেই না, জানিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। অস্কার বলেন, 'ডার্বি চ্যালেঞ্জিং ছিল। এই ম্যাচটাও কঠিন, বা কৌশলী হবে। নিজেদের সেরা ভাবলে বা এগিয়ে রাখলে ভুল হবে। সবসময় সেরা দল জেতে না। ওরা কাউন্টার অ্যাটাক কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। ওরা নতুন দল। তবে বলা যাবে না আমরা এগিয়ে থাকব। আমাদের ডার্বির হ্যাংওভার কাটিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলতে হবে। নিজেদের কখনই ফেভারিট বলতে পারব না। অবশ্যই সমর্থন আমাদের পক্ষে থাকবে। তবে এইধরনের ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। হেলাফেলা করা যাবে না।' 

বাবার মৃত্যুর জন্য দেশে ফিরে গিয়েছেন রশিদ। ডার্বি খেলতে পারেননি। শোনা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে শহরে ফিরবেন। কিন্তু দীর্ঘ যাত্রা করে, সেমিতে মাঠে নামার সম্ভাবনা নেই। বরং, হামিদ খেলতে পারেন। তবে এদিন দুই বিদেশিকে নিয়ে খোলসা করেননি অস্কার। উল্টে কটাক্ষ করেন। অস্কার বলেন, 'রশিদ, হামিদকে নিয়ে আমার থেকে সোশ্যাল মিডিয়া বেশি জানে। সবাই সবটাই জানে। তাই আমার আর বলার কিছু নেই।'

ডুরান্ডে ডায়মন্ড হারবারের সব ম্যাচ দেখেছেন ব্রুজো। তাই বিপক্ষ সম্বন্ধে নখদর্পণে। কলকাতা লিগেও তাঁদের খেলা দেখেছেন। কিবু ভিকুনার দলের আক্রমণের প্রশংসা করেন। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের পর সবচেয়ে বেশি গোল করেছে ডায়মন্ড হারবার। তাই প্রতিপক্ষকে সমীহ করছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। তবে খুঁজে বের করেছেন দুর্বলতাও। রক্ষণ তুলনায় কমজোরী। সেই ফায়দা তুলতে চাইছেন। ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করে দিতে চান। 

১৬ বার ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু মাঝে লম্বা খরা। ফাইনাল নিয়ে এখনই ভাবতে চান না অস্কার। ফোকাস ডায়মন্ড হারবার ম্যাচে। তবে কার্ড সমস্যা তাঁকে কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখছে। ছ'জনের কার্ড আছে। তারমধ্যে রয়েছে তিন বিদেশি সল ক্রেসপো, দিমিত্রিস ডিয়ামানটাকোস এবং মিগুয়েল ফিগুয়েরা। অর্থাৎ, সেমিফাইনালে একটি কার্ড দেখলেই ফাইনালে নেই। তাই এই বিষয়ে সতর্ক লাল হলুদ কোচ। অস্কার বলেন, 'আমাদের ট্রফি জেতার সুযোগ রয়েছে। তবে এত তাড়াতাড়ি বলা যাবে না। আমাদের সামনে কঠিন ম্যাচ। কিন্তু আমরা দিনদিন উন্নতি করছি। সব বিভাগ ভাল খেলছে। আপাতত আমাদের একমাত্র ফোকাস ডায়মন্ড হারবার ম্যাচে।' ডুরান্ডের সেমিফাইনালে জয় গুপ্তকে পাবে না ইস্টবেঙ্গল। রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এখনও এফসি গোয়ায় সঙ্গে কিছু পেপারওয়ার্ক বাকি। মঙ্গলবার বিকেলে রাজারহাটে সেমিফাইনালের প্রস্তুতি সারে ইস্টবেঙ্গল। আগের বছর সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি। কিন্তু এবার দল সম্বন্ধে আত্মবিশ্বাসী। বুধবার সমর্থকদের মাঠ ভরানোর অনুরোধ অস্কারের।