মোহনবাগান - ৫ (অ্যালবার্তো-২, ম্যাকলারেন-২, রবসন)

গোকুলাম - ১ (আপুইয়া-আত্মঘাতী)

সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: কিশোর ভারতীতে রবসন ম্যাজিক। কিন্তু শিল্ডের প্রথম ম্যাচে ৫-১ গোলে জয়ও থামাতে পারল না গো ব্যাক স্লোগানে। গ্যালারিতে চোখে পড়ল 'কাওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট' পোস্টার। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই তুমুল বৃষ্টি। তখনও ম্যাচ শুরু হতে বেশ কিছুক্ষণ বাকি। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ খেলতে ইরানে না যাওয়ার প্রতিবাদে শিল্ডের প্রথম ম্যাচ বয়কট করে মোহনবাগান সমর্থকরা। তারমধ্যে খুব বেশি হলে ৮০০ থেকে ১০০০ সমর্থক হাজির কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে। শুরুতে সেই সংখ্যা ছিল দুশো মতো। তবে ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে কিছুটা বাড়ে সমর্থকের সংখ্যা। দুটো টিফো নিয়ে হাজির ছিল বাগান সমর্থকরা। তারমধ্যে সমর্থকদের থেকে 'শেম শেম' টিফো কেড়ে নেয় পুলিশ।

ম্যাচ শুরুর মুখে গ্যালারিতে 'কাওয়ার্ড ম্যানেজমেন্ট' টিফো দেখা যেতেই সেটাও নামিয়ে নেয় পুলিশ। তবে গোটা ম্যাচ জুড়ে চলল 'গো ব্যাক' স্লোগান। ফাইভ স্টার পারফরম্যান্স রবসন রবিনহোর।‌ অ্যালবার্তো, ম্যাকলারেনদের একের পর এক গোলও কমাতে পারল না সমর্থকদের ক্ষোভ। আগাগোড়াই চলে সমর্থকদের স্লোগান। পাঁচ গোলে জয়ের পরও স্লোগান অব্যাহত। 

আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচ দেখতে হাজির ছিলেন সভাপতি দেবাশিস দত্ত এবং সচিব সৃঞ্জয় বসু। পাঁচ গোলে জয়ের দিন এমন বিক্ষোভ মেনে নিতে পারেননি বাগান সচিব। সৃঞ্জয় বসু বলেন, 'এই দলটা অনেক সাফল্য পেয়েছে। একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা কাম্য নয়। এটা নাও করলে পারত।'  দুপুর থেকেই আকাশের মুখ ভার। কিন্তু মোহনবাগানের খেলা ঝলমলে। শিল্ড শুরুতেই ফাইভ স্টার পারফরম্যান্স। বৃহস্পতি বিকেলে গোকুলাম কেরল এফসিকে ৫-১ গোলে হারাল মোহনবাগান। অনবদ্য রবসন। নিজের জাত চেনালেন ব্রাজিলিয়ান। ম্যাকলারেনের একটু পেছন থেকে খেলেন। কিন্তু গোটা মাঠ জুড়ে খেললেন। একাই একশো। তিনটে অ্যাসিস্ট, একটি গোল। তবে বিশ্বমানের গোলের জন্য ম্যাচের সেরা ম্যাকলারেন। জোড়া গোল জেমি ম্যাকলারেন‌, অ্যালবার্তো রডরিগেজের। অন্য গোলটি রবসনের।

শেষ দুই ম্যাচে জোড়া হারের পর নেমেছিল মোহনবাগান। মাঝে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইরানে না যাওয়া নিয়ে ঝামেলার শেষ নেই। যথেষ্ট চাপ ছিল হোসে মোলিনার দলের ওপর। কিন্তু পারফরম্যান্সে তার লেশমাত্র নেই। বরং দাপুটে পারফরম্যান্স। বিরতিতে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। তারমধ্যে বিশ্বমানের গোল ম্যাকলারেনের। ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। রবসনের কর্নার থেকে অ্যালবার্তোর হেডে গোল। ম্যাচের ২৭ মিনিটে ২-০। জেমি ম্যাকলারানের অনবদ্য গোল। দুরপাল্লার শটে চোখ ধাঁধানো গোল অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপারের।‌ বিরতির আগে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। ম্যাকলারেন থেকে বল পান রবসন। কিন্তু বাইরে মারেন মনবীর। 

দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন গোল। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ব্যবধান কমায় গোকুলাম। আপুইয়ার আত্মঘাতী গোলে ২-১। ডানদিক থেকে এডুয়ার্ডের ক্রস আপুইয়ার পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। তবে ব্যবধান কমলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি কেরলের দল। বাগানের কাছে খড়কুটোর মতো উড়ে যায়। ম্যাচের ৫১ মিনিটে মোহনবাগানের তৃতীয় গোল। রবসনের সেন্টার থেকে ফের হেডে গোল অ্যালবার্তোর। বিরতির পর লকগেট খুলে যায়। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বহু কাঙ্ক্ষিত গোল পান রবসন। ব্রাজিলিওর শট পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায়। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে পঞ্চম গোল মোহনবাগানের। অভিষেকের পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ম্যাকলারেন। সবুজ মেরুন জার্সিতে অভিষেক হয় মেহতাব সিংয়ের।