আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এক বৃদ্ধ। মুখে অক্সিজেন মাস্ক। বাঁ হাতে মোবাইল। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মোবাইলের দিকে। কী দেখছিলেন? শনিবার রাতে তখন যুবভারতীতে চলছিল মোহনবাগান-মহমেডান ম্যাচ। কয়েকদিন আগে হলে হয়তো মাঠে বসেই এই ম্যাচটি দেখতেন। বা বাড়িতে বসে টিভির পর্দায় খেলা দেখতেন। কিন্তু জীবনের শেষ মোহনবাগান ম্যাচ দেখলেন মৃত্যুশয্যায় শুয়ে।

বৃহস্পতিবার থেকে দূরারোগ্য ব্যাধিতে কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলেন সমরকুমার চাকি। এই ম্যাচটাই ৬৮ বছরের মোহনবাগান ভক্তের জীবনের শেষ ম্যাচ হয়ে গেল। সোমবার সকালে প্রয়াত হলেন সমরকুমার চাকি। তাঁর মৃত্যুর খবর দেন ছেলে সৌমেন চাকি। তিনিও আদ্যপান্ত মোহনবাগানি। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। শেষ যাত্রায় মরদেহ মুড়ে ফেলা হয় সবুজ মেরুন পতাকায়। 

প্রয়াত বাগান সমর্থকের ছেলে জানিয়েছিলেন, অসুস্থতার জন্য তাঁর বাবা ইদানিং মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে পারতেন না। কিন্তু কোনও খেলা মিস হতো না। মোহনবাগানের প্রত্যেক ম্যাচ টিভিতে দেখতেন। শনিবার সকাল থেকে তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। কিন্তু শরীর মোহনবাগানের প্রতি প্রেমে বাধা সাধতে পারেনি। মৃত্যুশয্যায় শুয়েই মোহনবাগান-মহমেডান ম্যাচ দেখেন তিনি। পুরো ৯০ মিনিট মোবাইলে খেলা দেখেন।

এই ভিডিও ভাইরাল হতেই ময়দানেথ সমস্ত ভেদাভেদ মুছে যায়। মাঠের যাবতীয় শত্রুতা ভুলে তাঁর আরোগ্য কামনা করে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও। কিন্তু তাঁকে ফেরানো সম্ভব হল না। রবিবার রাতে তাঁর অবস্থায় আরও অবনতি হয়। তবে একটাই শান্তি, মিনি ডার্বিতে মোহনবাগানের আধিপত্য বিস্তার করে জয় তাঁকে অনাবিল আনন্দ দিয়েছে। অন্তত জেনে গেলেন, প্রিয় দল আরও একবার লিগ শিল্ড জয়ের দোরগোড়ায়। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে, এবারও নজির গড়তে চলেছে মোহনবাগান। বিদায়বেলায় এটাই হয়তো তাঁর চরম প্রাপ্তি।