মহমেডান স্পোর্টিং - ০
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি - ১ (আলাদিন)
সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: অভিষেকেই চমক দিতে চেয়েছিলেন আন্দ্রে চের্নিশভ। হয়েও যেত। যে ফুটবল খেলেছে মহমেডান, অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া উচিত ছিল। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দিল না। শেষ মুহূর্তের গোলে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ০-১ এ হার দিয়ে আইএসএল শুরু মহমেডান স্পোর্টিংয়ের। ম্যাচের ৯০+৫ মিনিটে গোল করেন আলাদিন আজারাই। ডুরান্ড কাপেও নিয়মিত গোল পান মরক্কোর স্ট্রাইকার। ফাইনালে গোল করে মোহনবাগানের স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছিলেন। এদিনও মহমেডানের আশায় জল ঢাললেন। দুই পরিবর্ত ফুটবলারের যুগলবন্দীতে এল ম্যাচের একমাত্র গোল। থই সিংয়ের পাস থেকে গোল করেন আলাদিন। কিন্তু আক্রমণের শুরুতেই বল নর্থ ইস্টের গুইলার্মোর হাতে লাগে। যা রেফারির চোখ এড়িয়ে যায়। সেই মুভ থেকেই গোল হয়। অর্থাৎ প্রথম ম্যাচই রেফারির ভুলের খেসারত দিল হল আইএসএলে নবাগতদের। নয়তো জিততেও পারত মহমেডান। অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া উচিত ছিল। গোটা ম্যাচে আধিপত্য বজায় রেখে শেষ মিনিটের একটি ভুলে ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে যায়। ভাগ্যকেই দুষবেন সাদা কালো ব্রিগেডের রুশ কোচ।
ঐতিহাসিক মুহূর্ত। পরব মিটিয়ে সন্ধেয় মাঠ ভরায় প্রায় হাজার পাঁচেক সমর্থক। আইএসএলের প্রথম ম্যাচ। যথেষ্ট উদ্যমে শুরু করে সাদা কালো ব্রিগেড। প্রতিপক্ষ ডুরান্ড কাপ জয়ী নর্থ ইস্ট ইনসাইটেড এফসি। সুতরাং, জানাই ছিল ম্যাচটা সহজ হবে না। কিন্তু সেই তুলনায় দুই দলের মধ্যে ভাল ফুটবল খেলে মহমেডান। আই লিগের সঙ্গে আইএসএলের মানের আকাশ পাতাল পার্থক্য। তারওপর সামনে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সেই তুলনায় ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলে সাদা কালো ব্রিগেড। বল ধরে ছোট ছোট পাসে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে আন্দ্রে চের্নিশভের দল। নজর ছিল মানজোকির ওপর। বেশ কয়েকবার বক্সে ঢুকে পড়েন সাদা কালোর বিদেশি ডিফেন্ডার। অ্যালেক্সিস গোমেজের সঙ্গে জুটি বেঁধে কয়েকবার বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে যান। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে ব্যর্থতা।
ম্যাচের প্রথমার্ধে কোনও সুযোগ নেই নর্থ ইস্টের। পুরোটাই দাপট ছিল মহমেডানের। শুধু একটি হাফ চান্স পায় ডুরান্ড জয়ীরা। মিস করেন গুইলার্মো। বলের দখল মহমেডানের অনেক বেশি ছিল। মূলত বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠছিল সাদা কালো ব্রিগেড। সব বিভাগেই বিপক্ষকে টেক্কা দেয় মহমেডান। কিন্তু প্রথমার্ধ গোলশূন্য শেষ হয়। প্রথম ম্যাচ অনুযায়ী যথেষ্ঠ ভাল ফুটবল খেলে কলকাতার তৃতীয় প্রধান। নজর কাড়েন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস গোমেজ। কোনওভাবেই খালি হাতে মাঠ ছাড়ার কথা নয় মহমেডানের। দ্বিতীয়ার্ধেও দাপট ছিল কলকাতার দলের। গোলের দুটো নিশ্চিত সুযোগ মিস করে মহমেডান। ম্যাচের ৭১ মিনিটে বিকাশ সিংয়ের শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তার দশ মিনিট পরে আবার সুযোগ ছিল। ম্যাচের ৮২ মিনিটে অ্যালেক্সিসের শট একটুর জন্য বাইরে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে নর্থ ইস্ট। বল ধরে খেলার চেষ্টা করে জুয়ান পেড্রোর দল। যার ফলে শেষদিকে কয়েকটা সুযোগ তৈরি হয়। ম্যাচের অতিরিক্ত সময় আসে জয়সূচক গোল। মূলে দুই সুপার সাব। থই সিংয়ের পাস থেকে আলাদিন আজারাই। আইএসএলের শুরুতে হোঁচট খেলেও মন জয় করেছে মহমেডানের খেলা।
