সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: বুধ সন্ধেয় ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়াতে পারলে কি সেলিব্রেট করবেন? প্রশ্ন শুনে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন জবি জাস্টিন। যে ক্লাবের হাত ধরে পেশাদার ফুটবল জীবনের সূচনা, যে ক্লাব তাঁকে নাম, খ্যাতি, যশ সবকিছু দিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে গোল পেলে উদযাপন করবেন কিনা হয়তো বুঝতে পারছিলেন না। বিশ্ব ফুটবলে এমন একাধিক উদাহরণ রয়েছে। যেখানে প্রাক্তন ক্লাবের বিরুদ্ধে গোল করে সেলিব্রেট করতে দেখা যায়নি তারকা ফুটবলারদের। তবে সেই তালিকায় নাম লেখানোর ইচ্ছে নেই জবি জাস্টিনের। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্য শ্রদ্ধা, সম্মান সবই অটুট। অতীত ভোলেননি। ভুলতেও চান না। তবে বর্তমানে তাঁর ফোকাস ডায়মন্ড হারবারকে ফাইনালে তোলা। তাই ভাল গোল করলে সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপন করতে দ্বিধা করবেন না। জবি বলেন, 'পুরোনো ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলা বিশেষ মুহূর্ত। সমর্থক এবং প্রাক্তন সতীর্থদের সম্মান করি। তবে এখন আমার বর্তমান দলে পুরো ফোকাস। এই টুর্নামেন্টকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি যদি ভাল গোল করতে পারি, মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে সেলিব্রেট করব। তবে সবসময় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে সম্মান করব। ফ্যান এবং প্রাক্তন সতীর্থদের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় থাকবে।'
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেনি ডায়মন্ড হারবার। যুবভারতীতেই পাঁচ গোল হজম করে। কিন্তু জবির কাছে সেই ম্যাচ অতীত। খারাপ ফলের জন্য লালকার্ডকেই দায়ী করেন। ভুলভ্রান্তি শুধরে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে অলআউট ঝাঁপাতে তৈরি। জবি বলেন, 'মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কিছু সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছে। আমরা লালকার্ড দেখি। নয়তো আমরা লড়াই করতে পারতাম। ম্যাচে ফিরতেও পারতাম। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। কিন্তু সেমিফাইনালে পৌঁছে খুবই খুশি। আমরা হারতে চাই না। আমরা একটা ভাল ম্যাচ খেলতে চাই। আশা করছি ম্যাচটা ভাল হবে।' লাল হলুদ সমর্থকে ঠাসা থাকবে গ্যালারি। এটা কি বাড়তি চাপ হবে তাঁদের জন্য? এমন মনে করছেন না ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী। জবি বলেন, 'আমি কলকাতায় খুব অল্প সময় কাটিয়েছি। তবে এইটুকু বুঝতে পেরেছি, এখানকার মানুষ ভাল ফুটবল দেখতে চায়। খেলাটা ভাল হলে সমর্থকরা উপভোগ করবে।'
২০১৭ থেকে ২০১৯, দু'বছর ইস্টবেঙ্গলে কাটান জবি। কলকাতা লিগে লাল হলুদের তুরুপের তাস ছিলেন। ঘরোয়া লিগ খেলেই প্রচারের আলোয় আসেন। কোচ খালিদ জামিলের তত্ত্বাবধানে আই লিগ খেলেন। ছিলেন অ্যালেজান্দ্রো মেনেন্দেজের পছন্দের ফুটবলার। লাল হলুদ জার্সিতে ৩৯ ম্যাচে ১৬ গোল রয়েছে জবির। বুধবার লাল হলুদের গোলে বল জড়ানোর দায়িত্ব তাঁর। কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলতে চান কিবু ভিকুনা। কেরলের দুই ফুটবলারই ডায়মন্ড হারবারের কোচের ভরসা। একজন যেমন গোল করার দায়িত্বে, অন্যজন গোল আগলানোর। একসময় লাল হলুদের শেষ প্রহরী ছিলেন মির্শাদ মিচু। সেমিফাইনালে সম্ভবত ডায়মন্ড হারবারের গোলের নীচে তিনিই থাকবেন। ডিয়ামানটাকোস, মিগুয়েল, ক্রেসপোদের পা থেকে বল কাড়ার দায়িত্ব কেরলের কিপারের। জবির সঙ্গে একই সময় ইস্টবেঙ্গলে ছিলেন। ২০১৭ থেকে ২০২১, চার বছর লাল হলুদে ছিলেন। তবে স্মৃতি খুব সুখকর নয়। মাত্র ১১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। এবার প্রাক্তন দলকে রোখার চ্যালেঞ্জ মির্শাদের সামনে।
