আজকাল ওয়েবডেস্ক: এগিয়ে আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ৭ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে সূর্যকুমার যাদবের ভারত।
সেই ম্যাচে কি লিওনেল মেসিকে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দেখা যাবে? শুধু লিও মেসি কেন, তাঁর দুই বন্ধু লুইস সুয়ারেজ ও রড্রিগো দি' পলও কি সূর্যকুমার যাদবদের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য উপস্থিত থাকবেন মুম্বইয়ের স্টেডিয়ামে? হয়তো তাই। হয়তো নয়।
তবে সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট তুলে দেওয়া হল বিশ্ববন্দিত আর্জেন্টাইনের হাতে। ভারত ও আমেরিকার ম্যাচের টিকিট আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ তুলে দিলেন মেসিকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উন্মাদনা বাড়ানোর এর থেকে ভাল সুযোগ কি আর ছিল জয় শাহের হাতে? ক্রিকেটকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার এর থেকে ভাল মওকা কি ছিল?
ক্রিকেট বোঝে ব্যবসা। মেসির মতো ব্র্যান্ডকে সামনে পেয়ে বিশ্বকাপ জ্বর গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করলেন না জয় শাহ। সেই সঙ্গে মেসি, দি' পল ও সুয়ারেজের হাতে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের নব্য জার্সি তুলে দেওয়া হল। অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে মেসি বলে গেলেন, ''সি ইউ সুন।'' তবে কি মেসিকে দেখা যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে?

মেসিকে নিয়ে সবসময়েই জল্পনা। মেসি প্রহেলিকা তৈরি করে যান। ডান প্রান্ত থেকে বল নিয়ে দৌড়তে দৌড়তে কাট করে ভিতরে ঢুকে পড়বেন তিনি। তার পরে বাঁ পায়ে শট নেবেন। ওই অঞ্চল মেসি-জোন হিসেবেই পরিচিত। সবাই জানেন তিনি ওই জায়গা দিয়েই ছুটবেন বল পায়ে। অথচ তাঁকে কেউ থামাতেই পারেন না।
সেই মেসির ভারত সফরের শেষ স্টেশন ছিল রাজধানী। এখান থেকেই তিনি উড়ে যাবেন মায়ামিতে। দিল্লির কুয়াশার জন্য বিলম্বিত হয় এলএম ১০-এর ফ্লাইট। নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে তিনি দিল্লিতে পা রাখেন। বিকেলে থ্রি মাস্কেটিয়ার্স মেসি, দি পল ও সুয়ারেজ যখন অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন তখন খেলা চলছে মিনার্ভা পাঞ্জাবের যুব দল ও সেলিব্রিটি দলের। মেসি উঠতি ফুটবলারদের সঙ্গে ছবি তোলেন, তাদের সঙ্গে পাস-পাস খেলেন।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার সঙ্গে মাঠে আসেন আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ। মেসিরা তখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে। জয় শাহ মেসিকে ১০ নম্বর জার্সি, সুয়ারেজকে ৯ নম্বর ও দি পলকে ৭ নম্বর জার্সি উপহার দেওয়া হয়। জয় শাহ ভারত-আমেরিকা ম্যাচের টিকিট তুলে দিলেন মেসির হাতে। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দলের ক্রিকেটারদের সই সম্বলিত স্পেশাল ব্যাট তুলে দেওয়া হয় আর্জেন্টাইন মহাতারকার হাতে।
কলকাতা দিয়ে মেসির ভারত সফর শুরু হয়েছিল। শেষটা হল দিল্লিতে। রাজধানীও মেতে ওঠে মেসি-ম্যানিয়ায়। তিনি শট মেরে বল গ্যালারিতে পাঠান। তাঁর দুই বন্ধুও হাসিমুখে বল গ্যালারিতে ফেলেন। উঠতি ফুটবলার, কচিকাঁচাদের সঙ্গে মেসি সময় কাটান বেশ কিছুক্ষণ। তিনি যে উপভোগ করছেন মুহূর্ত, তা বোঝাই যাচ্ছিল। কলকাতায় মেসির দুই সতীর্থের নাম পর্যন্ত উচ্চারিত হয়নি। মুম্বই-দিল্লিতে মেসির সঙ্গে সঙ্গে দুই সুপারস্টারেরও নাম শোনা গেল। মহিলা জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলকিপার অদিতি চৌহান তাঁর জার্সিতে সই চাইলেন তিন তারকার। তাঁরাও হাসিমুখে সই করে দেন। ভারতের প্রাক্তন তারকা ভাইচুং ভুটিয়ার সৌজন্য বিনিময় করেন বিশ্বফুটবলের তিন স্টারের সঙ্গে।
এমন মনে রাখার মতো ফ্রেম কলকাতাতেও দেখা যেতে পারত। অত্যুৎসাহী কিছু মানুষের জন্য সেই দৃশ্য দেখা গেল না। উলটে দর্শক অসন্তোষে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হল। মেসি এদিনই ভারত ছাড়বেন। মেসি-মুহূর্ত কিন্তু মনে থেকে যাবে ভক্তদের।
