আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে তৌহিদের দুরন্ত সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হৃদয়ের নাম এখন তৌহিদ। 

তিনি না থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই হয়তো শেষ হয়ে যেত। কে বলতে পারে লজ্জার কোনও স্কোর হয়তো করত বাংলাদেশ। যা নিয়ে উপহাস করত ক্রিকেটপাগলরা! ভারতও হয়তো খুব সহজে ম্যাচটা জিতে নিত। 

কিন্তু তৌহিদ হৃদয় অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন। তিনি সেঞ্চুরি করলেন। একটা দিকে কামড়ে পড়ে থাকলেন। দুবাইয়ের প্রবল গরমে তাঁর শরীরে খিঁচুনি ধরল। বারংবার মাঠে লুটিয়ে পড়লেন। আবার জল খেয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন ব্যাট হাতে। অকুতোভয় তৌহিদ বীরের মতো লড়ে গেলেন। সেঞ্চুরি করলেন। তার পরে শান্ত ভাবে সেই সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন। এই সেঞ্চুরি করার পথে সতীর্থ জাকের আলির সঙ্গে ১৫৪ রান জুড়লেন। যা রেকর্ডও বটে। 
 
গুগল সার্চ ইঞ্জিনে তৌহিদ হৃদয় এখন ট্রেন্ডিং। এই ধরনের আইসিসি টুর্নামেন্ট নতুন কোনও নায়কের জন্ম দিয়ে যায়। শাকিব-তামিমের পরে বাংলাদেশের নতুন নায়ক বোধহয় তৌহিদ হৃদয়। শাকিব-তামিম-মুশফিকুর-মাহমুদুল্লাহর ছায়ায় এতদিন ঢাকা ছিলেন তৌহিদ। এদিন মরুশহরে নতুন জন্ম হল তাঁর। আগামীর বাংলাদেশে তিনি হতেই পারেন ম্যাচ উইনার। এসব অবশ্য যদিকিন্তুর কথা। লক্ষ্মীবারের দুপুরে দুবাইয়ে তৌহিদের খেলা ইনিংস দীর্ঘদিন মনে থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগলদের।  

ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই ম্যাচের আগে তৌহিদের সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত ৯৬। এদিন তৌহিদ ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেলেন। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরির যে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তাও আবার দল যখন খোঁড়াচ্ছে। একের পর এক উইকেট খুইয়ে শ্বাসরোধ হওয়ার অবস্থা। সেই পরিস্থিতিতে তৌহিদের ব্যাট কথা বলতে শুরু করল। 

বাংলাদেশের ক্রিকেটে উঠতি প্রতিভা ছিলেন এই হৃদয়। ২০২৩ সালে সব ফরম্যাটে ৯১৮ রান করেছিলেন তিনি। সেটাই ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হৃদয়ের প্রথম বছর। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচে ৯২ রানের ইনিংস খেলে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

২০২০ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে জিতেছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করেছিলেন হৃদয়। সেই শুরু হৃদয়ের পথচলা। তার পরে সময় যত গড়িয়েছে হৃদয় পরিণত হয়ে উঠেছেন। এদিন  মরুশহরে হৃদয় খেললেন জীবনের সেরা ইনিংস। ১১৮ বলে ১০০ রান করে তিনি ফেরেন হর্ষিত রানার বলে। তৌহিদ হৃদয়ের ইনিংসে সাজানো ছিল ৬টি চার ও ২টি ছক্কা। তাঁর জন্যই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ২২৮ রানে। বাংলাদেশের হৃদয় জিতলেন তৌহিদ। দেশের মান রাখলেন তিনি।