আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি টেস্টের শুরুটা যেমন ছিল ভারতের দাপটে, চতুর্থ দিনে চিত্রটা উল্টে গিয়েছিল পুরোপুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচ একসময় পরিণত হয়েছিল ধৈর্যের লড়াইয়ে। প্রথম ইনিংসে ২৪৮ রানে অল-আউট হয়ে যাওয়ার পর ফলো-অন খেলতে নেমে দুর্দান্ত লড়াই করলেন শাই হোপরা। যে কারণে জয়ের জন্য পঞ্চম দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে।

কুলদীপ যাদবের ক্ষেত্রে দিল্লি টেস্টে দুই ইনিংসের দু’রকম গল্প। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে ৫ উইকেট তুলে ঘূর্ণির জাদু দেখানোর পর দ্বিতীয় ইনিংসে পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে যায়। অধিনায়ক শুভমান গিল ও কোচ গৌতম গম্ভীরের সাহসী সিদ্ধান্তে ফলো-অন করানোর ফল কিন্তু ভারতকে ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে আসে।

কুলদীপ, যিনি সাধারণত অত্যন্ত মিতব্যয়ী বোলার হিসেবে পরিচিত, এবার দিলেন ১০৪ রান।  টেস্ট কেরিয়ারে প্রথমবার এক ইনিংসে শতরান খরচ করে কুলদীপ নিলেন মাত্র ৩ উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে লড়াইয়ের নায়ক দুই ব্যাটার। তাঁরা জন ক্যাম্পবেল ও শাই হোপ। ক্যাম্পবেল তুললেন নিজের প্রথম টেস্ট শতরান, আর হোপ পেলেন আট বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ। এই দুই ব্যাটার ধৈর্য ও আক্রমণের মিশেলে গড়লেন এক স্মরণীয় জুটি, যা ভারতীয় বোলারদের প্রায় অসহায় করে দেয়।

রবীন্দ্র জাদেজা ও কুলদীপ যাদব দু’জনকেই দীর্ঘ সময় মাঠে কাটাতে হয়। জাদেজাও দিলেন ১০৪ রান, আর কুলদীপ দ্বিতীয় সেশনে তুলে নেন রস্টন চেজ, ক্যারি পিয়েরে ও টেভিন ইমলাকের উইকেট। অবশেষে নতুন বলে মহম্মদ সিরাজ শাই হোপকে ফিরিয়ে ভারতের জন্য খানিকটা স্বস্তি এনে দেন।

কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ জুটি আরও এক ধাক্কা দেয়। আকিম গ্রিভস ও জেডন সিলস গড়েন দশম উইকেটে ৭৯ রানের জুটি, দলের স্কোর নিয়ে যান ৩৯০ পর্যন্ত। এতে শুধু ব্যবধানই কমেনি, ভারতের উপরও চাপ বাড়ে। ভারতকে টেস্ট জিততে হলে পঞ্চম দিন ৫৮ রান করতে হবে।

দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম টেস্টে একাধিক রেকর্ড গড়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব। রবিবার অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে দুরন্ত স্পেল উপহার দিলেন তিনি। ২৬.৫ ওভারে ৮২ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এই নিয়ে টেস্টে পঞ্চম ফাইভ-ফার নিলেন কুলদীপ।

এদিনের ফাইভ উইকেট হল দিয়ে কুলদীপ হয়ে গেলেন সবচেয়ে দ্রুত পাঁচটি পাঁচ-উইকেট পাওয়া বাঁ-হাতি লেগ স্পিনার। পরিসংখ্যান বলছে, কুলদীপ এখন সমান জায়গায় রয়েছেন ইংল্যান্ডের জনি ওয়ার্ডলের সঙ্গে। ওয়ার্ডল যেখানে ২৮ টেস্টে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন, সেখানে কুলদীপ তা করেছেন মাত্র ১৫ টেস্টেই। যা একেবারেই নজিরবিহীন।

কুলদীপের স্পিন জাদুতে প্রথম ইনিংসে ২৪৮ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮১.৫ ওভারে অলআউট হওয়ার পর ভারত পায় বিশাল ২৭০ রানের লিড। এই লিড নিয়েই শুভমান গিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলো-অন করানোর সিদ্ধান্ত নেন।

সকালের সেশনে কুলদীপের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত হয় অতিথি দল। তিনি ধারাবাহিকভাবে ফিরিয়ে দেন শাই হোপ, টেভিন ইমলাচ ও জাস্টিন গ্রেভসকে, ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।

শেষদিকে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন ক্যারি পিয়েরে ও অ্যান্ডারসন ফিলিপ, নবম উইকেটে ৪৬ রানের জুটি গড়ে। তবে লাঞ্চের পরপরই যশপ্রীত বুমরা দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পিয়েরে-র উইকেট ভেঙে দেন।