আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিনি 'এশিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান' হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এতটা পড়ার পরে সবাই বুঝতেই পারবেন কার কথা বলা হচ্ছে। তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার জাহির আব্বাস। শুধুমাত্র ব্যাট হাতে তিনি যে রানের পাহাড়ে চড়েছিলেন তা নয়। তিনি একজন ভাল শিক্ষকও।
১৯৮৯ সালে পাকিস্তান সফরে গিয়েছে ভারতীয় দল। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের ফর্ম পড়তির দিকে। অনুশীলনে ব্যস্ত আজ্জু। মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে জাহির আব্বাস। তিনি ভাল করে লক্ষ্য করছিলেন আজহারের ব্যাটিং অনুশীলন। কিছুক্ষণ ভাল করে দেখার পরে আজহারের গ্রিপটাই বদলে দেন জাহির আব্বাস।
প্রাক্তন পাক ক্রিকেটারের গ্রিপ বদলে দেওয়ায় আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় আজহারের। তাঁকে 'ব্র্যাডম্যান' বলার পিছনে কারণও ছিল। এশিয়ার মধ্যে তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান যাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০-টি সেঞ্চুরি রয়েছে। একই প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তিনি দু'টি সেঞ্চুরি করেছেন। একবার নয়, এমন ঘটনা ঘটেছে আটবার। জাহির আব্বাস ব্যাট হাতে নামলে তাঁকে আউট করা ছিল রীতিমতো কঠিন। আউটই হতে চাইতেন না তিনি।
সেই জাহির আব্বাসের প্রেম কাহিনি অবাক করার মতো। ভারতীয় সুন্দরীর প্রেমে মজে জাহির ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁর প্রথম স্ত্রীকেই। মহসিন খান-রীনা রায়, তারও বহু পরে সানিয়া মির্জা ও শোয়েব মালিকের প্রেমপর্ব নিয়ে চর্চা হয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশে। জাহির আব্বাস ও রীতা লুথরার ভালবাসা-পর্ব নিয়েও কম চর্চা হয়নি সেই সময়ে।

রীতা লুথরার সঙ্গে প্রথম দেখার সময়ে জাহির আব্বাস বিবাহিত ছিলেন। তাঁর তিন কন্যা। কিন্তু ভারতীয় সুন্দরী রীতা লুথরাকে প্রথম দেখাতেই ভালবেসে ফেলেন এশিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান। ১৯৮০ সালে শুরু সেই প্রেম কাহিনি। সেই সময়ে জাহির আব্বাস কাউন্টি খেলতেন গ্লস্টারশায়ারের হয়ে। রীতা লুথরা ইন্টিরিয়র ডিজাইন-এ কোর্স করার জন্য বিলেতে যান। সেখানেই দু'জনের সাক্ষাৎ। পাকিস্তানি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, রীতাকে দেখেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন জাহির।
আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দুই পরিবারের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল আগে থেকে। জাহির ও রীতার বাবা একে অপরের বন্ধু ছিলেন। রীতার পরিবার আগে থাকত ফয়সলাবাদে। পরে ভারতে চলে আসে তারা।
রীতাকে বিয়ে করার জন্য কঠিন পদক্ষেপ করেন জাহির। প্রথম স্ত্রী নাসরিনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন জাহির। রীতাও বড় সিদ্ধান্ত নেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন রীতা। নাম বদলে হয়ে যান সামিনা। ১৯৮৮ সালে জাহির ও রীতা বিয়ে করেন। ১৯৮৫ সালে জাহির আব্বাস ব্যাট-প্যাড তুলে রাখেন। পরবর্তীকালে তিনি আইসিসি-র সভাপতি হয়েছিলেন।

সামিনা পরবর্তীকালে নামী উদ্যোগপতি হন। ইন্টিরিয়র ডিজাইনের বড় সড় ব্যবসায়ী বনে যান। তাঁদের এক কন্যা। নাম সোনাল। জাহির আব্বাসকে ক্রিকেটদুনিয়া স্মরণ করে তাঁর ক্রিকেটের জন্য। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের আখ্যানও উঠে আসে আলোচনায়। তা নিয়ে চর্চা চলে। চায়ের পেয়ালায় তুফান ওঠে।
আরও পড়ুন: 'আশ্চর্যের বিষয়,' ২০১৯ বিশ্বকাপে ধোনির মন্থর ব্যাটিং নিয়ে মুখ খুললেন কিউয়ি তারকা...
