ইস্টবেঙ্গল - (ডেভিড, ক্রেসপো)

আলতেইন আসের - ( মাইরাত, সেলিম, টিটভ) 

সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: এবারও পারলেন না কার্লেস কুয়াদ্রাত। দল বদলালেও ভাগ্য পরিবর্তন হল না। বেঙ্গালুরু এফসির পর ইস্টবেঙ্গল কোচ হিসেবেও হোজাগেলডিয়েভ ইয়াজগুলির কাছে হার কুয়াদ্রাতের। বুধবার আলতেইন আসেরের কাছে ২-৩ গোলে হারল লাল হলুদ। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র কোয়ালিফায়ার থেকে বিদায় ইস্টবেঙ্গলের। তবে এখনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলবে কলকাতার প্রধান। এদিন এক গোলে এগিয়েও তিন গোল হজম। মরশুম শুরুতেই রেড অ্যালার্ট। আনোয়ার আলি, হেক্টর ইউস্তের সংযোজনে রক্ষণ হয়তো কিছুটা মজমুত হবে। তবে তাসত্ত্বেও নতুন মরশুমে ডিফেন্স চিন্তায় রাখবে কুয়াদ্রাতকে। তিন ম্যাচে পাঁচ গোল হজম। বুধ সন্ধেয় প্রায় ৩০ হাজার সমর্থককে হতাশ করল ইস্টবেঙ্গল। মাদি তালালকে বোতলবন্দি করে লাল হলুদের জয়ের রাস্তা আটকে দেন তুর্কমেনিস্তান দলের কোচ। ঘরের মাঠে খেলা, তারওপর বিপক্ষে কোনও বিদেশি নেই। কিন্তু তার ফায়দা তুলতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। 

প্রথমার্ধ ঘটনাবহুল। এক গোলে এগিয়েও জোড়া গোল হজম। ডুরান্ড কাপের পর এএফসিতেও গোলের খাতা খোলেন ডেভিড লালনসাঙ্গা। ম্যাচের ৭ মিনিটের মাথায় মিজো স্ট্রাইকারের করা গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। নন্দকুমারের পাস থেকে ডেভিডের হেড বিপক্ষের গোলকিপারের পায়ে লাগে। বল গ্রিপ করতে পারেননি বাবায়েভ। ফিরতি বল বাঁ পায়ের শটে গোল। এই একটি শট ছাড়া প্রথমার্ধে লাল হলুদের খেলায় কোনও ঝাঁঝ ছিল না। ম্যাচের ১৩ মিনিটে সমতা ফিরতে পারত। কিন্তু টিটভের শট বাঁচায় প্রভসুখন গিল। তবে সমতা ফেরাতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি।

১৭ মিনিটে ১-১ করেন মাইরাত আনায়েভ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল হজম করেন গিল। তার ১১ মিনিটের মাথায় আবার গোল। এবার অবশ্য কিছু করার ছিল না ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপারের। ম্যাচের ২৮ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ ফ্রিকিকে গোল করেন নুরমিরাডভ সেলিম। প্রথমার্ধে মাঝামাঝি হঠাৎই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় লাল হলুদ। ডুরান্ডের প্রথম দুই ম্যাচে ম্যাচের সেরা হলেও এদিন দাগ কাটতে পারেননি মাদি তালাল। মাঝমাঠের দখল ছিল না লাল হলুদের হাতে। বিরতির আগেই ব্যবধান বাড়তে পারত। ম্যাচের ৪১ মিনিটে রহমানের শট বাঁচায় গিল। প্রথমার্ধের শেষদিকে সমতা ফেরাতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু নুঙ্গার শট বাঁচায় বিপক্ষ কিপার। 

তিনজন বিদেশিকে রেখে শুরু করেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। কিন্তু কেউই নজর কাড়তে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে দিমিত্রিয়স ডিয়ামানটাকোস এবং ক্লেইটন সিলভাকে নামান কুয়াদ্রাত‌। অবশ্য তার আগেই ১-২ গোলে পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৫২ মিনিটে মিহেল টিটভের গোলে আবার এগিয়ে যায় তুর্কমেনিস্তানের দল। মাইরতের শট বাঁচান গিল। কিন্তু ফিরতি বল গোলে রাখেন আলতেইনের স্ট্রাইকার। যদিও এরপরও ম্যাচে ফেরার একটা আপ্রাণ চেষ্টা করে লাল হলুদ বাহিনী। ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ২-১ করেন ক্রেসপো। তখনও মনে হয়েছিল ম্যাচে সমতা ফেরাবে ইস্টবেঙ্গল। সেই জায়গাটা তৈরি হয়েও গিয়েছিল। কিন্তু ৮০ মিনিটে ক্লেইটনের গোল বাতিল হয়ে যায়।

গোলকিপার বল গ্রিপ করা সত্ত্বেও তাঁর হাতে লাথি মেরে বল বের করে গোলে ঠেলেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ফাউল দেন রেফারি। শেষ পাঁচ মিনিট বিপক্ষের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করলেও শেষপর্যন্ত হেরেই মাঠ ছাড়তে হল। শারীরিক গঠনের ফায়দা তোলে তুর্কমেনিস্তানের দল। 

ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী