আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৯ অক্টোবর, ২০২৪। অস্কার ব্রুজোঁ সাতসকালে শহরে পা রেখেই সন্ধ্যায় নেমে পড়েছিলেন ডার্বিতে। কার্লেস কুয়াদ্রাত দলকে ডুবিয়ে দিয়ে লাল-হলুদের চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন। অস্কার এসে বসেন লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবের হটসিটে।
ইস্টবেঙ্গলের ডাগ আউটে প্রথম ডার্বির অভিজ্ঞতা ভাল ছিল না স্প্যানিশ মায়েস্ত্রোর। আইএসএলের মহাম্যাচ মোহনবাগান ২-০ গোলে খুব সহজেই জিতে নিয়েছিল সেদিন।
১৮ অক্টোবর, ২০২৫। একবছর আগের দিন আর আজ যেন একই বিন্দুতে এসে মিশে গেল। গত বছরের ১৯ অক্টোবর ও চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর হারই দস্তুর হয়ে ধরা দিল অস্কারের কাছে। শনিবার শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগান টাইব্রেকারে হারাল ইস্টবেঙ্গলকে।
আরও পড়ুন: ২২ বছর পর শিল্ড জয়, ফের ডার্বি জিতে চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান
অবশ্য ইতিহাসের চাকা আগেই ঘুরিয়েছেন অস্কার। ডুরান্ড কাপের ডার্বি তিনি জিতে নিয়েছিলেন। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ সমর্থকদের আশা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ডুরান্ডে যদি মোহনবাগানের মতো শক্তিশালী দলকে হারানো যায় এবং টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেওয়া যায়, তাহলে শিল্ডের ফাইনালে মোহনবাগানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাবে না কেন?
কিন্তু যা ভাবা যায়, তা হয় না। শনিবারের ডার্বিতে প্রথমে গোল করে এগিয়ে গেলেও ইস্টবেঙ্গল পারল না। বিরতির ঠিক আগে মোহনবাগান সমতা ফিরিয়ে আনে। তার পরে ম্যারাথন ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। কিন্তু পেনাল্টি শুট আউট শুরুর আগে দেবজিৎ মজুমদারকে নামানো হয়। দেবজিৎ 'সেভজিৎ' নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর গ্লাভসজোড়া দলকে স্বস্তি এনে দেয়। কিন্তু শনি সন্ধ্যার যুবভারতীতে দেবজিৎ পারলেন না দলকে বাঁচাতে।
পেনাল্টি স্পট থেকে গোললাইন পৃথিবীর রহস্যময় সরণী। সেই রাস্তায় পথ হারিয়েছেন অনেকেই। এদিন জয় গুপ্তা বিপথগামী হলেন। ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁ সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলে গেলেন, ''গোলকিপার বদলানোর সময়ে আমার কোচিং স্টাফের পরামর্শ নিই। ওদের পরামর্শ অনুযায়ী আমি নতুন গোলকিপার নামিয়েছিলাম। আমি মানছি এটা আমার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।''
ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশের গোলকিপার প্রভসুখান গিল ততক্ষণে ১২০ মিনিট খেলে ফেলেছিলেন। এদিনের ম্যাচটা খারাপ খেলেননি পাঞ্জাবতনয়। তাঁকে তুলে নেওয়াটা হয়তো ঠিকভাবে মেনে নিতে পারেননি গিল। লাল-হলুদের গোলকিপার কোচ সন্দীপ নন্দীকে দেখা যায় তিনি বোঝাচ্ছেন গিলকে। আবার দেবজিৎকেও উৎসাহ জোগান সন্দীপ। পেনাল্টি শুট আউটে নামার আগে দেবজিৎ বলেছিলেন ডাগ আউটেই। খুব সামান্যই ওয়ার্ম আপ করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। গিলকে কি টাইব্রেকারে সুযোগ দেওয়া যেত না?
মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা খেলোয়াড়জীবনে নামী গোলকিপার ছিলেন। তিনি কিন্তু বিশাল কাইথের পরিবর্তে নতুন কাউকে বার আগলানোর দায়িত্ব দেননি পেনাল্টি শুট আউটের সময়ে। বিশাল দলের একনম্বর গোলকিপার। তাঁকে বসানোর কোনও প্রয়োজনই বোধ করেননি মোলিনা।
ইস্টবেঙ্গলের একনম্বর গোলকিপার গিল। গতবার আইএসএলে অধিকাংশ ম্যাচই তিনি খেলেছেন। এদিনও ভালই খেলেন। শুরুতেই ম্যাকলারেনকে থামিয়ে দিয়েছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের বারের নীচে দলকে স্বস্তি দিয়েছিলেন গিল। কেন যে তাঁকে তুলে নেওয়া হল, সেটাই বড় প্রশ্ন। যুবভারতীতে মোহনবাগান চ্যাম্পিয়ন হলেও ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কারের এই গোলকিপার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে জোর চর্চা। ওই একটা সিদ্ধান্তেই হয়তো ভাল খেলিয়াও পরাজিত হতে হল ইস্টবেঙ্গলকে।
আরও পড়ুন: মোলিনার কাছে সুপার কাপের ডার্বি জয়ের আবদার শুরু, সমর্থকদের বিশেষ বার্তা বিশালের
