আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৮ বছরের অনন্ত প্রতীক্ষার অবসান বিরাট কোহলির।
দ্রাবিড়ীয় মন্ত্র বুঝি তাঁর মজ্জায় মজ্জায়। মনপ্রাণ দিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে চেষ্টা করে যেতে হবে। কোথাও হয়তো ন্যায়বিচার অপেক্ষা করে রয়েছে।
বিরাট মন্ত্রে দীক্ষিত হতে পারে এই বঙ্গের ইস্টবেঙ্গলও। কার্লোস কুয়াদ্রাত জমানায় শেষবার সুপার কাপ জিতেছিল লাল-হলুদ। ট্রফি বুভুক্ষু এক ক্লাবে সাফল্য এসেছিল এগারো বছর বাদে।
তার পরে আর ট্রফি নেই। আইএসএলের বৃত্তে পা রাখার পর থেকেই ব্যর্থতা হয়েছে নিত্যসঙ্গী। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান এগিয়ে গিয়েছে কয়েক আলোকবর্ষ। আইএসএলে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে শেষ করাই দস্তুর হয়ে গিয়েছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবের।
আর চিরদিনের ডার্বিতে নামলেই হার রুটিন হয়ে গিয়েছে। তারও আগে দেশের সেরা আই লিগ ঢোকেনি দীর্ঘকাল। মোহনবাগান কিন্তু আই লিগ জিতেও টেক্কা দিয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে।
মঙ্গলবার বিরাট কোহলির শাপমুক্তির রাতে ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা মনে করছেন, আরসিবি অবশেষে জগদ্দল পাথরটাকে নাড়াতে সক্ষম হয়েছে। এবার হয়তো ইস্টবেঙ্গলও পারবে অসাধ্যসাধন করতে।
চলতি বছর খেলার মাঠে উপেক্ষিত-বঞ্চিতরাই বিজয়কেতন উড়িয়েছে। জার্মানিতে লুইস এনরিকের প্যারিস সাঁ জাঁ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে। যে পিএসজি ভাল দল গড়েও প্রতিবার ব্যর্থ হয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে, এবার তারাই নতুন এক ইতিহাস লিগে গেল।
ইংল্যান্ডের তারকা ফুটবলার হ্যারি কেন প্রথমবার কোনও বড় খেতাব জিতলেন।
ইউরোপা লিগ জিতল টোটেনহ্যাম হটস্পার। এ তো গেল ফুটবল মাঠের কথা। হোবার্ট হ্যারিকেন্স প্রথমবার বিগ ব্যাশ জিতেছে। মঙ্গলবার জিতল আরসিবি।
তবে কি এবার ইস্টবেঙ্গল? আরসিবি জিততেই কলকাতার দুই প্রধানের সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে টীকা টীপ্পনী। আইপিএল স্টেশন জয় করার জন্য কোহলির অনন্ত প্রতীক্ষা দেখে বুকে বল আসছে লাল-হলুদ সমর্থকদেরও। কেউ পোস্ট করেছেন, ''এবার হয়তো আমরা...।'' পালটা দিয়েছে মোহনবাগান সমর্থকরাও, ''আরসিবিও দেশের সেরা লিগ জিতে নিল অথচ ইস্টবেঙ্গল পারল না জিততে।''
দিন আসে দিন যায়, পৃথিবী বদলায়। ইস্টবেঙ্গল বদলায় না। ট্রফি আসে না ক্লাবে। খেলতে নামলেই বিপর্যয় হয় নিত্যসঙ্গী। এই পরিস্থিতিতে কোহলির আরসিবি স্বপ্ন দেখাতে পারে। তারকাপ্রথাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে কেবলমাত্র টিমগেমের জোরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরসিবি।
ফুটবলমাঠে প্যারিস সাঁ জাঁ দেখিয়ে দিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য মহাতারকাদের দরকার নেই। একজন ভাল কোচ ও লড়াকু খেলোয়াড়দের নিয়ে একটা দলই যথেষ্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। খেলার মাঠে উপেক্ষিতদের এই উত্থান কি নজরে এসেছে ক্লাবকর্তাদের? বদলাবে কি দিন? ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে এখন প্রশ্ন অনেক, উত্তর জানা নেই।
