আজকাল ওয়েবডেস্ক: মোহনবাগান নির্বাচন নিয়ে জলঘোলা শেষ। মিলে গেল দুই পক্ষ। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে পাশাপাশি বসে গাঁটছড়া বাধার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন দেবাশিস দত্ত এবং সৃঞ্জয় বসু। ছিলেন সৌমিক বসুও। প্রায় দু'মাস কাদা ছোড়াছুড়ির পর হাত মেলাল মোহনবাগানের শাসক এবং বিরোধী গোষ্ঠী। এদিন ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মোহনবাগান ক্লাবে প্রবেশ করেন সৃঞ্জয় বসু। সঙ্গে একদল সমর্থক। প্রাক্তন বাগান সচিবের নামে ওঠে জয়ধ্বনি। তার কিছুক্ষণ আগেই ক্লাবে প্রবেশ করেন দেবাশিস দত্ত।

এদিন সচিব পদে মনোনয়ন জমা দেন সৃঞ্জয়। তারপর হাসিমুখে ভিকট্রি সাইন দেখিয়ে ছবির জন্য পোজ দেন দেবাশিস দত্ত, সৃঞ্জয় বসু, সৌমিক বসু এবং কুণাল ঘোষ। 

দেবাশিস দত্ত জানান, মোহনবাগান ক্লাবের ঐতিহ্যের কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে রাজনৈতিক কোনও প্রভাব রয়েছে কিনা সেটা খোলসা করতে চাননি। দেবাশিস দত্ত বলেন, 'আমরা সবাই মিলে মোহনবাগান ক্লাবের ঐতিহ্য রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। ক্লাবের ভালর জন্য দুটো দল তৈরি হয়। মিটিং চলে। কিন্তু দেখা যায়, দুই পক্ষের থেকেই ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। সৃঞ্জয় আমার ভাল বন্ধু। আমরা একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি। আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি এবং সৃঞ্জয় দু'জন বসলাম। আলোচনার ভিত্তিতে আমরা এবার সেরা কর্মকর্তার দল তৈরি করতে চলেছি। যারা সাফল্য দেবে এবং জয়ের ধ্বজা ওড়াবে।' রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে দেবাশিস দত্ত বলেন, 'মোহনবাগানে প্রচুর রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিতে ভরা। সবাই উদ্যোগ নিয়েছিল। অনেক আগে থেকেই কথাবার্তা চলছিল। যারা মোহনবাগানের ভাল চায়, তাঁরা চেয়েছিল আমরা একজোট হয়ে যাই।' 

দীর্ঘদিন একে অপরকে দোষারোপ করার পর ঠিক কবে এবং কীভাবে মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত হয়। এই প্রসঙ্গে সৃঞ্জয় বসু বলেন, 'অনেকদিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়। আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সব জায়গায় গনতন্ত্র থাকা উচিত। এবার মিটিংয়ের মাধ্যমে সদস্যদের সঙ্গে জনসংযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা দেখলাম লড়াই মাত্রা ছড়িয়ে যাচ্ছে। লাগাম দেওয়া উচিত। ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য আমরা আলাদা হয়েছিলাম। কিন্তু সবকিছু উপলব্ধি করার সময় আসে। প্রতিষ্ঠানের কথা ভেবে পদক্ষেপ নিতে হয়। আমরা শ্রেষ্ঠ মোহনবাগান একাদশ গড়ব।' এত ঝামেলা, আক্রমণের তীরের পরও কি একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব? সৌমিক বসু বলেন, 'হাতে হাত যখন রেখেছে, মালা বদল হবেই।' এটা বলার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে দেখা গেল সেই অভিনব দৃশ্য। হল মালাবদলও। একজন সদস্য দুই কর্তাকে একটি বিরাট গোলাপের মালা পরিয়ে দেয়। ২২ জনের প্যানেল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়নি। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, সভাপতি হচ্ছেন দেবাশিস দত্ত এবং সচিব সৃঞ্জয় বসু। টুটু বসু কি তাহলে কোনও পদেই থাকবেন না? এর উত্তরে দেবাশিস দত্ত জানান, 'টুটু বসু পদে থাকুন বা না থাকুন, উনি চিরকাল থাকবেন।' ১৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হতে পারে মোহনবাগানের নতুন কমিটি।