স্বাধীনতার পূর্ববর্তী ভারতের রাজ্যগুলির শাসকরা তাঁদের ঐশ্বর্যের জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁদের সেরা সময়ের সঙ্গে বিশ্বের কোনও রাজতন্ত্রের সম্পদের তুলনাই চলে না।
2
12
তাঁদের কাছে ছিল সেরা অলংকার এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় গাড়ি। বিপুল ঐশ্বর্যের সঙ্গে জীবনে এসেছে ভোগবিলাসিতা এবং অশ্লীলতা। আজকের কাহিনী মহারাজা ভূপিন্দর সিং (১৮৯১-১৯৩৮)-কে নিয়ে।
3
12
'পাতিয়ালা পেগ'-এর আবিষ্কারক হিসেবে পরিচিত মহারাজার ব্যক্তিগত জীবন ছিল আতিশয্য ভরপুর এবং উদ্ভট। তিনি তাঁর যৌনজীবনের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
4
12
পূর্বতন রাজ্য পাতিয়ালার মহারাজার হারেম (স্ত্রী এবং মহিলাদের থাকার জন্য বিশেষ অন্দরমহল)-এ ১০ জন স্ত্রী এবং ৩৫০ জন উপপত্নী ছিলেন। কথিত আছে যে তিনি ৮৮ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন যার মধ্যে ৫২ জন প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও বেঁচে ছিলেন।
5
12
ডমিনিক ল্যাপিয়ের এবং ল্যারি কলিন্সের লেখা 'ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট' বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, "যখন তিনি পরিণত বয়সে পৌঁছন, তখন তাঁর হারেমের প্রতি আসক্তি পোলো এবং শিকারের প্রতি আগ্রহকেও ছাপিয়ে যায়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে হারেমের বাসিন্দাদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।"
6
12
গ্রীষ্মকালে মহিলা পরিবেশিত হয়ে পুলে স্নান করতেন। বরফ ঠাণ্ডা জলে ভাসতে ভাসতে সেখানে উপস্থিত মহিলাদের আদর আপ্যায়ন নিতেন। তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে ছিল বিভিন্ন কামোত্তজক ভাস্কর্য।
7
12
গত এক দশক আমরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধির নানা খবর দেখতে পাই। বোটক্স, ফিলার, ফেসলিফ্ট এবং আরও অনেক কিছুর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, পাতিয়ালার মহারাজা ফ্রান্স এবং ব্রিটেন থেকে প্লাস্টিক সার্জনদের একটি দল নিয়োগ করেছিলেন। যাতে তাঁরা মহারাজার উপপত্নীদের শারীরিক গঠন তাঁর ইচ্ছানুযায়ী পরিবর্তন করতে পারেন।
8
12
মহিলাদের খুশি করতে নানা রকম কামোদ্দীপক ওষুধও সেবন করতে মহারাজা ভূপিন্দর। ল্যাপিয়ের এবং কলিন্সের মতে, "তাঁর ভারতীয় ডাক্তাররা সোনা, মুক্তো, মশলা, রূপো, ভেষজ এবং লোহার উপর ভিত্তি করে বেশ কিছু সুস্বাদু মিশ্রণ তৈরি করেছিলেন মহারাজার জন্য।''
9
12
অমিতব্যয়িতার জন্য বিখ্যাত এবং স্মরণীয় ছিলেন মহারাজ। জীবদ্দশায় তিনি একজন উদার আতিথ্যকারী, জাঁকজমকপূর্ণ পার্টির আয়োজন এবং বিশ্বজুড়ে ডাক্তার, শিল্পী এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি গাড়ি, রত্ন, পদক, চিত্রকর্ম, ঘড়ি, ওয়াইন এবং ইউরোপে ব্যয় করার মতো বিভিন্ন জিনিসপত্র সংগ্রহের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
10
12
বিখ্যাত ফরাসি সংস্থা ‘কার্তিয়ের পারি’-কে দিয়ে ১৯২৮ সালে এই কণ্ঠহার তৈরি করিয়েছিলেন মহারাজা ভূপিন্দর সিংহ। পাঁচ ছড়ার এই নেকলেস বানাতে প্রয়োজন হয়েছিল মোট ২৯৩০টি হিরে। কণ্ঠহারের মাঝে লকেট হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম হিরে। ২৩৪ ক্যারাটের ‘ইয়েলে ডি বিয়ার্স’। এ ছাড়াও এই গয়নায় আছে প্ল্যাটিনাম, টোপাজ এবং চুনি-সহ আরও বহু দুর্মূল্য রত্ন।
11
12
তাঁর এক স্ত্রী, মহারাণী বখতাওয়ার কৌর ১৯১১ সালের দিল্লি দরবারে ভারতের মহিলাদের পক্ষ থেকে ব্রিটেনের রানি মেরিকে একটি নেকলেস উপহার দিয়েছিলেন।
12
12
বিভিন্ন পদক সংগ্রহের জন্যও বিখ্যাত ছিলেন ভূপিন্দর। তাঁর কাছে সেই সময় ৪৪টি রোলস রয়েস গাড়ির একটি বহরও ছিল। তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় যিনি একটি ব্যক্তিগত বিমানের মালিক ছিলেন। পাতিয়ালায় একটি বিমানপথ তৈরি করেছিলেন মহারাজা ভূপিন্দর।