আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হওয়ার দৌড়ে মানসিক চাপ, অবসাদ এবং শারীরিক অসুস্থতা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। ‘টাকাই জীবনের শেষ কথা’, এই ভেবে বহু মানুষই মানসিক এবং শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়েও মোটা মাইনের চাকরি আঁকড়ে ধরে থাকেন। তবে ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা মাঝে মধ্যেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, টাকার চেয়ে স্বাস্থ্যের গুরুত্ব অনেক বেশি।

সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা সকলের নজর কেড়েছে। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন উপাসনা নামের এক যুবতী। তাঁর একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওই এখন নেটমাধ্যমে ভাইরাল। ‘ফ্রেঞ্চ অ্যাসোসিয়েট’ হিসাবে কর্মরত ওই যুবতী জানিয়েছেন, কী ভাবে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে মোটা মাইনের চাকরিকে তিনি বিদায় জানিয়েছেন। আধুনিক কর্মজীবনের কঠিন বাস্তবকে সহজ এবং সৎ ভাবে তুলে ধরেছেন তিনি।

ভিডিওতে উপাসনা বলেন, "আমি মাসে ৬০ হাজার টাকা আয় করতাম, কিন্তু চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। কাজটা সহজ ছিল, কিন্তু নাইট শিফট হওয়ার কারণে প্রতি তিন দিন অন্তর আমার কিছু না কিছু শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকত- মাথাব্যথা, অ্যাসিডিটি, নিম্ন রক্তচাপ বা উদ্বেগ। মাত্র ২২ বছর বয়সেই আমি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু আমার সামনে রাস্তাটা পরিষ্কার ছিল - হয় টাকা বাছতে হবে, না হলে স্বাস্থ্য।"

তিনি আরও যোগ করেন, "অনেকেই বলেন টাকা আজ আছে, কাল নেই। কিন্তু শরীর যদি এক বার ভেঙে পড়ে, তা হলে আপনি বা আপনার টাকা, কোনওটারই কোনও মূল্য থাকবে না। তাই আমি স্বাস্থ্যকেই বেছে নিয়েছি এবং নতুন করে সব কিছু শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে কী আছে আমি জানি না। দেখা যাক, জীবনে আবার কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াই এবং সাফল্য পাই।"

উপাসনার এই সাহসী সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটাগরিকদের অনেকেই। মন্তব্য বিভাগে উপচে পড়ছে প্রশংসা। এক জন লিখেছেন, "আমিও এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি! তোমার জন্য অনেক শুভেচ্ছা। তুমি যা পাওয়ার যোগ্য, তা সবই যেন পাও। আমরা তোমার পাশে আছি!"

আরও পড়ুন: ‘জেলে যেতে হলেও খুন করব’! মহিলা যাত্রীদের রড নিয়ে তাড়া উবার চালকের, কারণ জানলে ভিরমি খাবেন

ঘটনার জেরে অন্য এক জনের মন্তব্য, "জানি না কেন, কিন্তু এই রিলটা ভীষণ পরিচিত মনে হচ্ছে। তুমি খুব সাহসী। এ ভাবেই এগিয়ে চলো। ঠিক সফল হবে।"

তৃতীয় এক ব্যক্তি লেখেন, "আমিও ঠিক একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এবার আপনার থেকে অনুপ্রেরণা পেলাম। ধন্যবাদ।" আর এক জনের প্রশ্ন, "এটা কি আমার জন্যও কোনও ইঙ্গিত? আমার মাইনে ৬০ হাজারের কাছাকাছিও নয়, কিন্তু নাইট শিফট আর স্বাস্থ্যের সমস্যার ব্যাপারটা আমি খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি।"

এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর মন্তব্য, "আমি গত পাঁচ বছর ধরে একই বৃত্তে আটকে আছি। কেন জানি না, একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তুমি যে এমন একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছ, তার জন্য আমি তোমার প্রশংসা করি।"