আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাচ্ছেন রাস্তা দিয়ে, হঠাৎ করে নাকে পরিচিত সেই সুবাস... তাকিয়ে দেখলেন, লাল শালুতে মোড়ানো এক হাঁড়ি। জিভে এল জল।
বলছি বিরিয়ানির কথা। বাঙালি যেমন মাছে ভাতে, তেমনই আলু দেওয়া বিরিয়ানিতেও। চিকেন, মটন, ইলিশ কিংবা ডিম যে ধরণের বিরিয়ানির হাড়িই হোক না কেন, দেখা যায়, সবসময় তা মোড়া থাকে লাল কাপড়ে। কিন্তু এর পিছনের রহস্য কী? অনেকের ধারণা লাল রং যেহেতু আকর্ষণ করে, তাই দেওয়া হয় ওই রঙের কাপড়। কিন্তু না এটাই কারণ নয়। এর কারণ বহু পুরনো বা বলা ভাল ঐতিহাসিকও।
বিরিয়ানি মোঘলদের খাবার। যখন মোঘল সম্রাটরা যুদ্ধ করতে যেতেন, তখন পথে খিদে পেলে এমন কোনও খাবার যা সুস্বাদু আবার সহজেই বানিয়ে ফেলা যায় এরকম খাওয়ারের সন্ধান করতে গিয়ে এই বিরিয়ানি আবিষ্কার করে ফেলেন। সে সময় যুদ্ধের করতে যাওয়ার সময় ঘোড়ার পিঠে হাড়িতে চাপিয়ে দেওয়া হত চাল, ডাল, মশলা আর মাংস। এক পদের পেট ভর্তি খাবার। তারই বর্তমান রূপ বিরিয়ানি।
সেসময় মোগল শাসন চলছে ভারতে। ১৫৩৯ সালে চৌসার যুদ্ধে হুমায়ুন শের শাহ সুরির সঙ্গে যুদ্ধে হেরে পারস্যে আশ্রয় নেন। তখন পারস্য সম্রাট তাঁকে লাল গালিচায় উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। যে ক'দিন সেখানে ছিলেন, সেই ক'দিন সম্রাটকে খাদ্য পরিবেশনের সময় রূপালি পাত্রের খাবারগুলি লাল কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হত। সঙ্গে চিনামাটির পাত্রের খাবারগুলো সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকত। এই রীতি মোঘল সম্রাট হুমায়ুনকে খুব মুগ্ধ করে।
খাবার পরিবেশনের এই প্রথা ও রঙের ব্যবহার লখনউ শহরের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। মোঘলিয় রাজকীয় ভাব ও উষ্ণতা বোঝাতে এই রঙের ব্যবহার, যা আজও চলে আসছে। এরপর যখনই বিরিয়ানির হাঁড়ি দেখবেন, মনে মনে ভাববেন লাল গালিচা পাতা ঘর, সেখানে বসে আছেন এক সম্রাট। তাঁর সামনে রাখা পাত্র লাল কাপড়ে মোড়ানো, সেখান থেকে উঁকি মারছে বিরিয়ানি...
