আজকাল ওয়েবডেস্কঃ যে কোনও দম্পতির কাছে সন্তান সুখ জীবনের একটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। আধুনিক জীবনে গর্ভধারণে বেশ অনেকটাই দেরি হতে দেখা যায় কিংবা বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন অনেকেই। তবে প্রজনন শুধু মহিলাদের উপর নির্ভর করে না, পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ও মানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণা বলছে, গত ৪০ বছর ধরে ক্রমাগত কমেছে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা। কিন্তু ঠিক কী কারণে এমন ঘটছে তা নিয়ে নিশ্চিত নন গবেষকরা। শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার পিছনে ধূমপান, মদ্যপান থেকে পরিবেশ দূষণ, স্থূলতা সহ আরও অনেক কারণ থাকতে পারে বলে মত গবেষকদের। তাহলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, বাবা হতে চাইলে এক জন পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কত হওয়া উচিত। আর শুক্রাণুর ঘাটতি হলে কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন, জেনে নিন। 

স্পার্ম কাউন্ট কী

স্পার্ম কাউন্ট বলতে পুরুষের বীর্যপাতের সময় উপস্থিত শুক্রাণুর সংখ্যা বোঝায়। এটি সাধারণত প্রতি মিলিলিটার বীর্যে গ্রাম হিসেবে পরিমাপ করা হয়। শুক্রাণুর সংখ্যা বেশি থাকলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ে, অন্যদিকে শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকলে প্রজনন ক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে।

 

আরও পড়ুনঃ আদরের কামড়ে ঘনিয়ে আসতে পারে মৃত্যু! 'লাভ বাইট'-র এই সব মারাত্মক পরিণতি জানলে শিউরে উঠবেন

 

কমপক্ষে শুক্রাণুর সংখ্যা কত হওয়া উচিত

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ পুরুষের প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়নের বেশি এবং মোট ৩৯ মিলিয়নের কম শুক্রাণু থাকা উচিত নয়। যদি সংখ্যাটি এর চেয়ে কম হয়, তাহলে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে। তবে কেবল সংখ্যাই নয়, শুক্রাণুর গতি, আকার এবং গুণমানও গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন

* স্পার্ম কাউন্ট কম থাকলে পুরুষেরা যৌন আকাঙ্ক্ষার অভাব, অকাল বীর্যপাত, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন, যৌন কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। 

* অণ্ডকোষে ব্যথা বা ফোলাভাব কম শুক্রাণুর লক্ষণ হতে পারে। এই জাতীয় লক্ষণ অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। 

* পুরুষদের অত্যধিক ক্লান্তিও কম শুক্রাণুর সংখ্যার লক্ষণ হতে পারে। যদি পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরেও সারাদিন ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করেন তবে তা অবহেলা করা উচিত নয়। 

* পুরুষের শরীর, মুখ বা অন্যান্য অংশে লোম কমে গেলে তা স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে। এই লক্ষণগুলি টেস্টোস্টেরন এবং অন্যান্য হরমোনগুলির ভারসাম্যহীনতার লক্ষণও বহন করে। 


শুক্রাণুর সংখ্যা কীভাবে পরীক্ষা করবেন?

বীর্য বিশ্লেষণ নামক একটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে শুক্রাণুর সংখ্যা পরীক্ষা করা হয়। এটি একটি মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্টে শুক্রাণুর সংখ্যা, গতিশীলতা এবং আকৃতি উল্লেখ করা হয়। 

শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধির উপায়

* স্বাস্থ্যকর খাদ্য যেমন ভিটামিন সি, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খান
* বন্ধ্যাত্ব রোধ করতে মানসিক চাপ কমান। অতিরিক্ত চাপ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে মানসিক চাপমুক্ত থুক। 
* ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। যে কোনও ধরনের নেশাই এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। 
* নিয়মিত শরীরচর্চা করা যে উপকারী তা সকলেরই জানা। শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতেও ব্যায়ামের প্রভাব রয়েছে।