আজকাল ওয়েবডেস্ক: শৈশবে যাঁরা পাড়ার ছোটখাটো দোকানে চুল কাটিয়েছেন, তাঁদের পক্ষে এই জিনিস ভোলা অসম্ভব। চুল কাটা হয়ে গেলেই পাড়ার সেলুনের ‘নাপিতকাকু’ ঘাড়ে ঘষে দিতেন সাদা বরফের টুকরোর মতো একটা জিনিস? বরফের মতো ঠাণ্ডা নয়, তবু যেন একটা আরামদায়ক অনুভূতি পাওয়া যেত। চুল কাটার পর কোনও জায়গায় জ্বালার অনুভূতি থাকলে দ্রুত কমে যেত সেই জ্বালা। আধুনিক পার্লার কিংবা সালোঁর বাইরে যাঁরা চুল কাটেননি, তাঁদের কাছে অবশ্য সেই সাদা বরফের টুকরোর মতো জিনিসটি খুব একটা পরিচিত নয়। কিন্তু এক সময় সেলুনের সঙ্গে সমার্থক ছিল সেই সাদা বস্তুটি - ফটকিরি বা ফিটকিরি।

আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
কিন্তু জিনিসটি ঠিক কী? ফিটকিরি হল একটি রাসায়নিক যৌগ, যা মূলত পটাশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম এবং সালফার দিয়ে গঠিত একপ্রকারের লবণ। কালের নিয়মে আগের মতো প্রচলন না থাকলেও গুণে কিন্তু কম যায় না এই যৌগ। ফিটকিরির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি জলকে পরিশোধিত করতে পারে। পাশাপাশি এর জীবাণুনাশক এবং রক্তপাত বন্ধ করার গুণ রয়েছে।

১। জল পরিশোধন: ফিটকিরিতে যে আয়ন থাকে তার প্রভাব যদি একে জলে মেশানো হয়, তবে এটি জলের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা ও ময়লাকে জমাট বাঁধিয়ে থিতিয়ে পড়তে সাহায্য করে। এর ফলে জল পরিষ্কার হয়। এটি পানীয় জল বা ব্যবহারের জলকে প্রাথমিক পর্যায়ে শোধন করার একটি সহজ ও প্রচলিত পদ্ধতি।

২। ছোটখাটো কাটাছেঁড়া ও রক্তপাত বন্ধ করা: ফিটকিরির রক্ত বন্ধকারী গুণ রয়েছে। একারণেই চুল কাটার পর বা শেভিংয়ের সময় কেটে গেলে এটি ব্যবহার করা হত। ছোটখাটো আঘাতে রক্তপাত হলে ফিটকিরি ঘষলে রক্তনালী সংকুচিত হয় এবং রক্তপাত দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া ফিটকিরির আয়ন অনুচক্রিকার কাজ সহজ করে দেয়। ফলে রক্ত কণিকা দ্রুত জমাট বাঁধে।

৩। শরীরের দুর্গন্ধ দূর করা: ফিটকিরির জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই গুণ থাকায় এটি বাহুমূলের ঘামের কারণে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাধা দেয়। ফলে শরীরের দুর্গন্ধ কমে। এটি প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। স্নানের পর ভেজা ত্বকে ফিটকিরি ঘষা যেতে পারে।

৪। মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা: হালকা গরম জলে ফিটকিরি মিশিয়ে গার্গল করলে মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমে, মাড়ির সমস্যা বা মুখের ঘা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। তবে এক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে এটি ব্যবহার করতে হবে। কারণ ফিটকিরি খাওয়া উচিত নয়। ব্যবহারের পর মুখ সাধারণ জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলা উচিত।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে

৫। পায়ের যত্ন: ফিটকিরির অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিসেপটিক গুণ পায়ের ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ (যেমন অ্যাথলিটস ফুট যা টিনিয়া থেকে হয়) কমাতে সাহায্য করে। হালকা গরম জলে ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখলে পায়ের দুর্গন্ধ কমে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।