আজকাল ওয়েবডেস্ক: অফিসের বস মানেই কি ভরসার প্রতীক? না কি প্রতিদিন আপনাকে মানসিক চাপের দিকে ঠেলে দেওয়া এক দুঃস্বপ্ন? আধুনিক কর্মজীবনের বাস্তবতা বলছে, অনেক সময়ই একজন ‘টক্সিক বস’ হয়ে ওঠেন কর্মক্ষেত্রের বিষাক্ত বাতাসের উৎস। সরাসরি কিছু বলেন না, অথচ আচরণেই ছড়িয়ে দেন বিষ। কীভাবে বুঝবেন, আপনার বস আসলে সেই রকমই এক ‘টক্সিক’ চরিত্র?

১. সাফল্য আপনার, কৃতিত্ব তাঁর

আপনি রাত জেগে প্রেজেন্টেশন বানালেন, প্রজেক্ট করলেন দিন-রাত এক করে। কিন্তু ক্লায়েন্ট মিটিংয়ে এসে দেখলেন, বস হাসিমুখে বলছেন, “আমার টিম তো আমার প্ল্যানেই কাজ করেছে।” তিনি জানেন আপনি কী করেছেন, কিন্তু তা সামনে আনবেন না। কারণ, আপনার সাফল্য তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলে দিতে পারে।

২. চিরন্তন ‘মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট’

প্রতিটি ইমেল, প্রতিটি কল, এমনকি আপনি কীভাবে বসে আছেন, সবকিছুতেই নজর তাঁর। অথচ আপনার সমস্যায় তাঁর নজর নেই। কোনও বিশ্বাস নেই যে আপনি নিজের কাজ সামলাতে পারেন। কর্মীদের স্বাধীনতা? নৈব নৈব চ, নিয়ন্ত্রণই তাঁর পছন্দ।

৩. সম্মানহানি

সবার সামনে খুঁত ধরবেন, খোঁটা দেবেন, এমনকি তুচ্ছতাচ্ছিল্যও করবেন। যেন আপনি নন, আপনার ‘অপমান’ই তাঁর ‘পাওয়ার ডিসপ্লে’। ব্যক্তিগত বা পেশাদার সীমা এখানে খুব হালকা হয়ে যায়। মনে রাখবেন বস হলেও তিনি কিন্তু ব্যক্তি মানুষের মালিক নন। নিছকই একজন ঊর্ধ্বতন সহকর্মী। তাই একজন সহকর্মী হিসাবে যথেষ্ট সম্মান আপনার প্রাপ্য।

৪. সীমাহীন প্রত্যাশা, বিশ্রামের অধিকার নেই

‘সানডে মানে কাজের প্ল্যান’, ‘রাত দশটার মিটিং মানেই টিমস্পিরিট’—এই মানসিকতাই টক্সিক বসদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। আপনার জীবন, ঘুম, শরীর– কিছুই তাঁদের পরোয়া করার বিষয় নয়। কাজটাই তাঁদের কাছে একমাত্র প্রমাণ যে আপনি “লয়্যাল”। আপনার প্রাপ্য ছুটি চাইলে তিনি এমন করবেন যেন আপনি তাঁর কিডনি চেয়ে বসেছেন।


৫. কাজের মানের থেকেও কাজের সময় বেশি গুরুত্বপূর্ণ

কাজ যতই ভাল হোক, তার থেকেও বেশি নজর আপনি পূর্বে ঠিক করে দেওয়া নিয়ম মেনে চলছেন কি না। প্রশংসা করলেও সঙ্গে সঙ্গে যোগ করেন, “এখানে থামলে চলবে না, আরও ভাল করতে হবে।”

মোট কথা, মনে রাখবেন শুধু কাজ নয়, নিজের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষাও আপনার জন্য জরুরি। জীবন মানে শুধু টার্গেট পূরণ নয়, পেশাগত পরিবেশটাও সুস্থ হওয়া উচিত। মনে রাখবেন—সুখী কর্মজীবন মানে শুধু মাইনে নয়, মানসিক শান্তিও।