যৌনসঙ্গম শুধু মনই না, শরীরও ভাল রাখে। বিছানায় আনন্দে মেতে ওঠার পর অনেকেই ক্লান্ত হয়ে আর সঙ্গম-পরবর্তী সাবধনতাগুলি অবলম্বন করেন না। এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু যৌন কার্যকলাপের পর কোন কোন কাজ করা খুবই জরুরি? জেনে নিন।
যৌনসঙ্গমের পরই তৎক্ষণাৎ স্নান করতে যাওয়ার দরকার নেই। তবে যৌনমিলনের পর সামান্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে পুরুষ এবং মহিলাদের মূত্রনালি সংক্রমণ-সহ বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। গোপনাঙ্গের ভিতরের অংশ নয়, শুধু চারপাশ পরিষ্কার গরম জলে ধুয়ে নিন। চাইলে মাইল্ড সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে যাঁদের ত্বক সংবেদনশীল বা আগে থেকেই কোনও সংক্রমণ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সাবান ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে বা জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে যাঁদের ফোরস্কিন আছে, তাঁদের ধীরে টেনে ভিতরের অংশটিও আলতোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি।
অনেক মহিলাই মনে করেন যে যৌনমিলনের পর যৌনাঙ্গে ভিতরটা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা দরকার। কিন্তু এভাবে ডুচিং করলে উল্টো সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ এতে যৌনাঙ্গের ভিতরে থাকা স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা আসলে এটিকে সুরক্ষা দেয়। যৌনমিলনের পর যৌনাঙ্গের যত্ন নেওয়ার সেরা উপায় হলো এটিকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে দেওয়া। যৌনাঙ্গ নিজে থেকেই নিজেকে পরিষ্কার রাখে। এছাড়াও মনে রাখা দরকার, হালকা গন্ধ থাকা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং তা কোনও সমস্যার লক্ষণ নয়।
ডুচিংয়ের পাশাপাশি অনেক ওষুধের দোকানে বিভিন্ন ওয়াইপস, ক্রিম, আর স্প্রে পাওয়া যায়, যেগুলো দাবি করে যে এগুলো আপনার যৌনাঙ্গকে ‘ফ্রেশ’ রাখবে। কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগেই থাকে তীব্র সাবান, সুগন্ধি বা লোশন, যেগুলি ত্বকে জ্বালা বা ফুসকুড়ি তৈরি করতে পারে। তাই যৌনমিলনের পর শুধু গরম জলে হালকা করে ধুয়ে নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ। আর সুগন্ধি দেওয়া ট্যাম্পন, প্যাড, পাউডার বা স্প্রে ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে যদি আপনার সংক্রমণের প্রবণতা বেশি থাকে।
যৌনমিলনের সময় ব্যাকটেরিয়া ইউরেথ্রায় ঢুকে যেতে পারে। এর ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। মিলনের পর প্রস্রাব করলে সেই জীবাণুগুলো শরীর থেকে বার হয়ে যায়। তাই সঙ্গীর সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর পর অবশ্যই বাথরুমে যান।
যেহেতু যৌনমিলনের পর প্রস্রাব করা ভাল অভ্যাস, তাই জল খেতে ভুলবেন না। শরীরে পর্যাপ্ত জলীয় পদার্থ থাকলে আপনি বেশি প্রস্রাব করবেন, আর এর ফলে শরীর থেকে আরও বেশি ব্যাকটেরিয়া বার হয়ে যাবে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
গরম আর ঘামযুক্ত জায়গা হল ব্যাকটেরিয়া এবং ইস্ট বেড়ে ওঠার সবচেয়ে উপযুক্ত পরিবেশ। তাই এমন অন্তর্বাস ও পোশাক পরুন যা বাতাস চলাচল করতে দেয়। মহিলাদের টাইট প্যান্টিহোজ, গার্ডল বা খুব আঁটোসাঁটো প্যান্টি এড়িয়ে চলা উচিত। পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যই কটনের অন্তর্বাস ভাল। এগুলি আর্দ্রতা শোষণ করে। আর চাইলে ঘুমনোর সময় অন্তর্বাস না পরেও ঘুমতে পারেন। এতে আরাম বোধ হয়।
আপনার শরীর বা সঙ্গীর যৌনাঙ্গ স্পর্শ করার সময় যে ব্যাকটেরিয়া লেগে যেতে পারে, তা দূর করার। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাবান আর জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
যৌন সম্পর্কে সঙ্গীরা একে অপরকে ইস্ট সংক্রমণ দিতে পারেন। পুরুষদেরও এই ইনফেকশন হতে পারে। তাই যদি চুলকানি, জ্বালাপোড়া বা যৌনাঙ্গ থেকে ঘন সাদা স্রাবের মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে পরের বার ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসা করুন। আপনি যদি মনে করেন যে এই ধরনের সংক্রমণ হয়েছে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
