আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর ছুটি হোক বা সপ্তাহান্তের অবসর, মন উড়ু উড়ু হলেই বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। পাহাড় হোক বা সমুদ্র, দেশ হোক বা বিদেশ- নতুনকে জানার আনন্দে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়াই দস্তুর। কিন্তু অনেক সময়েই এই আনন্দের মাঝে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় হঠাৎ অসুস্থতা। সামান্য জ্বর, পেট খারাপ বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা মাটি করে দিতে পারে বহু প্রতীক্ষিত ছুটির সবটুকু আমেজ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্রমণে গিয়ে সুস্থ থাকা মোটেই কঠিন কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন শুধু সামান্য কিছু সতর্কতা এবং পূর্বপ্রস্তুতি।
ভ্রমণের পরিকল্পনা করার সময়ই স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনও দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ভ্রমণের ধকল শরীর নিতে পারবে কি না, বা আবহাওয়ার পরিবর্তনে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি, যে জায়গায় যাচ্ছেন, সেখানকার আবহাওয়া কেমন থাকবে, তার জন্য কোনও বিশেষ ওষুধ নেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, সেটাও চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর একমাত্র সাদা জিরাফ কোথায় থাকে? কার ভয়ে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয় তাকে? জানলে চোখে জল আসবে
এর সঙ্গেই গুছিয়ে নিতে হবে একটি প্রাথমিক চিকিৎসার কিট। এতে অবশ্যই রাখুন ব্যথানাশক ওষুধ, জ্বর কমানোর ওষুধ, অ্যান্টাসিড, বমি কমানোর ট্যাবলেট, অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ, ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক লোশন এবং ক্রেপ ব্যান্ডেজ। নিজের প্রয়োজনীয় কোনও বিশেষ ওষুধ থাকলে তাও নিতে ভুলবেন না।

ভ্রমণে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল দূষিত জল এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার। তাই এই বিষয়ে অতিরিক্ত সাবধান থাকা প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে, রাস্তাঘাটের যে কোনও জায়গা থেকে জল খাওয়া একেবারেই নিরাপদ নয়। সর্বদা বোতলবন্দি জল কিনুন এবং কেনার আগে দেখে নিন ছিপিটি ঠিকভাবে সিল করা আছে কি না। সম্ভব হলে জল ফুটিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। হোটেলের বাইরে কোনও পানীয় খেলে তাতে বরফ না নেওয়াই শ্রেয়, কারণ বরফটি কোন জলে তৈরি তা আপনার জানা নেই।
খাবারের ক্ষেত্রেও একই রকম সতর্কতা জরুরি। রাস্তার ধারের কাটা ফল, স্যালাড বা অনেকক্ষণ আগে তৈরি করে রাখা খাবার এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করুন গরম এবং সদ্য রান্না করা খাবার খেতে। যে হোটেলের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, সেখানে না খাওয়াই ভাল।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর একমাত্র সাদা জিরাফ কোথায় থাকে? কার ভয়ে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয় তাকে? জানলে চোখে জল আসবে

ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য সতর্কতাও অত্যন্ত জরুরি। খাবার খাওয়ার আগে এবং শৌচাগার ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন। সঙ্গে সব সময় একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন।
যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে মশার উপদ্রব থাকলে মশা তাড়ানোর স্প্রে বা লোশন ব্যবহার করুন। ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার মতো রোগ থেকে বাঁচতে সন্ধ্যায় শরীর ঢাকা পোশাক পরাই শ্রেয়। এছাড়াও, অতিরিক্ত রোদে ঘোরাঘুরি করলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এবং পর্যাপ্ত জল পান করে শরীরকে সতেজ রাখুন। লম্বা পথ হাঁটার পরিকল্পনা থাকলে আরামদায়ক জুতো পরা অপরিহার্য।
সবশেষে বলা যায়, ভ্রমণের আনন্দ সম্পূর্ণ উপভোগ করার জন্য শরীরকে সুস্থ রাখা সবার আগে দরকার। এই ছোট ছোট বিষয়গুলি মাথায় রাখলেই আপনার ভ্রমণ হয়ে উঠবে নির্ঝঞ্ঝাট, আনন্দময় ও স্মৃতিমধুর।