আজকালডেস্কঃ প্রতিদিন জল পান করা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। জলের মাধ্যমেই বেশিরভাগ শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু অনেকেই সারা দিনের কাজের চাপে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে ভুলে যান। আর শরীরে জলের ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হানা দিতে পারে। তাই ডিহাইড্রেশন হচ্ছে কিনা তা বোঝা জরুরি। সেক্ষেত্রে কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই সর্তক হন। 

১. ডিহাইড্রেশনের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে গাঢ় রঙের মূত্র, কম মূত্রত্যাগ। হলুদ প্রস্রাব হলে বুঝতে হবে শরীরে জলের অভাব রয়েছে। তাই স্রাবের রং লক্ষ করুন। এছাড়াও শরীরে জলের ঘাটতির কারণে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বোধও হয়।

২. শরীরে জলের অভাব হলে গরমকালেও ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। আচমকা ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করলে, ত্বকে ব্রণ ও চুলকানির সমস্যা দেখা দিলে তা শরীরে জলের ঘাটতির কারণে হতে পারে।

৩. কম জল খেলে সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি হতে পারে। অকারণে মাথা ঘোরা এবং মাথাব্যথাও হতে পারে। 

 

আরও পড়ুনঃ ৪০ পেরোলেই রোজ করতে হবে এই সব কাজ! হার্টের রোগ ছুঁতে পারবে না, দূর হবে অনিদ্রা

 

৪. অনেকের শরীরে জলের অভাব হলে রক্তচাপ কমে যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, যদি মনে হয় রক্তচাপ কমে গিয়েছে, ঘাম হচ্ছে, তাহলে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া উচিত। শরীরে জলের ঘাটতি হলে মুখে দুর্গন্ধও হয়। 

৫. গুরুতর ডিহাইড্রেশন আরও বিপজ্জনক হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে দ্রুত হৃদস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট। জলের অভাবে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমে যায়। তাই সমস্ত অঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য হৃদদযন্ত্রের উপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যেতে পারে। এমনকী খুব মারাত্মক ডিহাইড্রেশন হলে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন।


শুধু জল পান করলেই চলবে না, সঠিক পদ্ধতিতে জল খাওয়াও প্রয়োজন। কারণ ভুলভাবে জল খেলে উল্টে হতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা।


* সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্তত এক গ্লাস জল পান করলে শরীর থাকবে টক্সিনমুক্ত তেমনই ঘুমের সময় ধীরগতির বিপাকক্রিয়াকেও সক্রিয় করে। সকালের জল লিভার, কিডনি এবং ত্বককে সতেজ রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।

* একবারে পুরো গ্লাস জল পান করার পরিবর্তে, ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে অথবা কিছুক্ষণ মুখে রেখে জল পান করুন। এতে পেটে আরও লালা যাবে, যা হজমশক্তি উন্নত করবে, মাইগ্রেনের সমস্যায় স্বস্তি পাবেন। 

* ফ্রিজের ঠান্ডা জল সবসময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ঠান্ডা জল পান করলে শরীরের পরিপাকতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। খুব গরম লাগলে মাটির পাত্রের জল পান করতে পারেন। 

* খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে জল পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এটি হজম প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে দেয় এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এবং ৩০ মিনিট পরে জল পান করুন। 
 
* পুষ্টিবিদদের মতে, দাঁড়িয়ে জলপান করার অভ্যাস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। দাঁড়িয়ে জলপান করলে লিভার, কিডনি থেকে বদহজম, আর্থারাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বসে মেরুদন্ড সোজা করে জল খাওয়াই বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি।