কোনও বড় অঘটন ঘটার আগে শরীর সিগন্যাল দেয়, কেবল সেগুলো সঠিক সময় বুঝে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই দেখা যায়, এই উপসর্গগুলো সাধারণ মানুষ বিশেষ পাত্তা দেয় না। এড়িয়ে যায়। হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের অন্যান্য জটিলতা হওয়ার আগেও কিন্তু শরীর একাধিক লক্ষণ দেয়, হয়তো সেগুলো খুবই সামান্য বা সাধারণ। কিন্তু সতর্ক থাকলে বড় বিপদ এড়ানো যায়।
হার্টের সমস্যা আছে বুঝবেন কীভাবে?
ক্যালিফোর্নিয়ার এক কার্ডিওলজিস্ট, সঞ্জয় ভোজরাজ সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এইচ.ই.এ.আর.টি পদ্ধতির বিষয়ে কথা বলেছেন। এটি একটি পাঁচ ধাপের পদ্ধতি যেটার মাধ্যমে মানুষ সহজেই হৃদয়ের কোনও সমস্যা থাকলে সেটা প্রাথমিক স্টেজে ধরে ফেলতে পারবেন। বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে টের পাওয়া যাবে জটিলতার কথা। কী সেই পাঁচটি ধাপ?
প্রথমে হচ্ছে এইচ: অর্থাৎ হিডেন প্যাটার্ন। শরীরে আকস্মিক কিছু বদল ঘটছে সেটা টের পাচ্ছেন, কিন্তু কেন বুঝছেন না। যেমন হঠাৎ করে ক্লান্তিভাব বেড়ে যাওয়া, ঠিকঠাক ঘুম না হওয়া, অল্পেতেই হাঁপিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি।
তারপর আসছে ই: অর্থাৎ এভরিডে সিম্পটম, বা রোজকার লক্ষণ। এটা নিজেকে রোজ মনিটর করতে হবে। দেখতে হবে মাড়ি বা হাতে কোথাও কোনও সমস্যা বা অস্বস্তি হচ্ছে কিনা হঠাৎ করে, বুকের ধুকপুকানি বেড়ে গিয়েছে কিনা, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে কিন।
এ: আস্ক বেটার কোয়েশ্চেন। এটা গুরুতর লক্ষণ কিনা নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করার বদলে জিজ্ঞেস করুন, এই লক্ষণটা কি নতুন? এক টানা হচ্ছে? বাড়াবাড়ি লাগছে?
আর: রিস্ক রিয়েলিটি। নিজের জীবনযাপনের দিকে নজর দিন। নজর দিন ডায়েট, স্ট্রেস লেভেলের দিকে। আরও একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত, জিন। আপনার পরিবারে কারও হার্টের সমস্যা আছে কিনা।
টি: টেক অ্যাকশন আর্লি। উক্ত কোনও লক্ষণ দেখলে বা সুবিধার না মনে হলে, বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার বদলে চিকিৎসকের কাছে যান। বাড়াবাড়ি হলে যেমন হয়রানি বাড়বে, তেমনই খরচ বাড়বে। তার থেকে অল্পে সমস্যাকে মিটিয়ে নিন।
এই সহজ পদ্ধতি মেনে চললে হার্টের গুরুতর সমস্যা সহজে এড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক। এই লক্ষণ দেখে ভয় পাওয়া, রিঅ্যাক্ট করা বা কনফিউজড হয়ে যাওয়ার বদলে বরং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন।
তাঁর মতে, এই সহজ পদ্ধতি মেনে চললে যে কেবল হার্টের বিভিন্ন জটিলতা প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়ে বা বড় বিপদ এড়ানো যায় সেটাই নয়, একই সঙ্গে যে ব্যক্তি এটি মেনে চলেন তাঁর জীবনযাপনেও অনেক বদল আসে। উন্নতমানের জীবনযাপন করা শুরু করেন। সচেতন হন।
ইনস্টাগ্রামের এই পোস্টে চিকিৎসক সঞ্জয় ভোজরাজ এও জানিয়েছেন যে হার্ট আগে থেকেই লক্ষণ দেয়, কিন্তু তাঁর কাছে যখন রোগীরা আসেন অধিকাংশই জানান যে তাঁরা নাকি কোনও লক্ষণ টের পাননি। তাই তিনি দেরি হওয়ার আগে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
