কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা মূত্র থেকে শুরু করে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায় এই অঙ্গ। তাই সুস্থ থাকতে বৃক্কের হাল ঠিক রাখা জরুরি। মানুষের শরীরে কিডনির সংখ্যা দু’টি, তাই একটি বিকল হলেও কাজ চলতে পারে অন্যটি দিয়ে। ফলে অন্যান্য অঙ্গের মতো প্রথমেই কিডনির ক্ষতির আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিডনির সমস্যায় চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। কিডনি যদি ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন শরীর নানা সংকেত দিতে শুরু করে। কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো চোখে পড়ে হাত-পা ও ত্বকে। তেমনই কয়েক লক্ষণ দেখলে একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়।
১. হাত-পা ফোলাঃ কিডনি যদি অতিরিক্ত লবণ ও তরল শরীর থেকে বার করে দিতে না পারে, তাহলে সেই জল জমে যায় পায়ের পাতায়, গোড়ালিতে, হাতের আঙুলে এমনকী চোখের নিচে। এই ফোলা প্রতিদিন সকালে বা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর বেশি চোখে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ যতই পুষ্টিগুণে ঠাসা হোক, এঁদের চিয়া সিড খেলেই তিলে তিলে শেষ হবে শরীর! কারা ভুলেও ছোঁবেন না এই বীজ?
২. ফোলা ভাবঃ কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে তরল ধরে রাখার ফলে হাত ও পা ফুলে যায় এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বড় দেখায়। ঘুম থেকে উঠলে অথবা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ফোলাভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই হাত বা পা কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে ফোলাভাব দেখলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
৩. ত্বকের রং ও ধরন পরিবর্তনঃ কিডনি সঠিকভাবে ফসফরাস ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ নিঃসরণ করতে না পারলে তা ত্বকে জমা হয়। ফলে হাত-পায়ে চুলকানি, লালচে দাগ, র্যাশ বা ত্বকে খসখসে ভাব দেখা দেয়। এটি কিডনির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার অন্যতম উপসর্গ।

৪. পেশিতে টান ধরা বা দুর্বলতাঃ কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। বিশেষ করে ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে পায়ের পেশিতে টান ধরা, খিঁচুনি বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
৫. হাত-পায়ে ঠান্ডা ভাব বা অসাড়তাঃ রক্তচাপের ওঠানামা ও অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতির কারণে হাত বা পায়ে অনেক সময় ঠান্ডা অনুভব হয়। কখনও কখনও সুঁচ বা কাঁটার মত অনুভূতি বা অসাড়তা তৈরি হয় যা কিডনি সংক্রান্ত স্নায়ুর সমস্যার পূর্বাভাস হতে পারে।
৬. হাত-পায়ের ত্বক শুষ্ক ও ফাটাঃ কিডনি সঠিকভাবে ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ না করলে ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ, খসখসে এবং ফেটে যায়। অনেকের ত্বকে বিবর্ণতা ও অনুজ্জ্বল ভাবও দেখা দেয়।
৭. হাত-পায়ে অস্বাভাবিক চুলকানিঃ শরীরে টক্সিন জমার ফলে অনেক সময় হাত ও পায়ে সারাক্ষণ চুলকাতে থাকে, যা সাধারণ মশা বা অ্যালার্জির কারণে নয়, বরং কিডনি কাজ না করার কারণে হয়ে থাকে। এই চুলকানি অনেক সময় রাতে বাড়ে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
