চা-কফি না খেয়ে অনেকেরই দিন শুরু হয় না।চিকিৎসকদের মতে, এই অভ্যাস যতই প্রিয় হোক না কেন, তা শরীরের জন্য ভাল নয়। সকালে খালি পেটে কফি বা চা খাওয়ার ফলে অনেক সময় অ্যাসিডিটি, গ্যাস, এমনকী অন্ত্রের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই দিন শুরু করা উচিত এমন কিছু প্রাকৃতিক পানীয়তে চুমুক দিয়ে যা শরীরকে চাঙ্গা রাখবে, হজম শক্তি বাড়াবে এবং অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখবে। তেমনই পাঁচটি পানীয়র বিষয়ে জেনে নিন যা সকালে কফি বা চায়ের বিকল্প হতে পারে।
১. লেবু মিশ্রিত গরম জল: সকালে এক গ্লাস গরম জলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীরে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সরবরাহ হয়। এটি লিভারকে ডিটক্স করে, হজমের রস নিঃসরণে সাহায্য করে এবং সকালে শরীরে এনার্জি জোগায়। নিয়মিত খেলে ত্বকও উজ্জ্বল হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
২. জিরে জল: রাতে এক চামচ জিরে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল হালকা গরম করে খেলে হজমের উৎসেচক সক্রিয় হয়। এটি পেট ফাঁপা, গ্যাস, বা বদহজমের সমস্যা কমাতে কার্যকর।বিশেষজ্ঞদের মতে, জিরে জলে উপস্থিত প্রাকৃতিক তেল পেটের প্রদাহ কমায় এবং অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
৩. আমলকির রস: আমলকি ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, অন্ত্রের কোষকে সুরক্ষিত রাখে এবং টক্সিন বার করে দেয়। সকালে খালি পেটে আমলকির রস খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে, ত্বক ও চুলও ভাল থাকে।
৪. অ্যালোভেরা জুস: অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক প্রদাহনাশক গুণ হজমতন্ত্রকে শান্ত রাখে। এটি পেটের আলসার ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস বা বুক জ্বালার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা প্রতিদিন সকালে সামান্য অ্যালোভেরা জুস খেলে উপকার পাবেন। তবে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।

৫. ইসবগুল মেশানো গরম জল: যাদের অনিয়মিত মলত্যাগ বা কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের জন্য এটি দারুণ উপকারী। এক গ্লাস গরম জলে এক চামচ ইসবগুল মিশিয়ে সকালে খেলে তা অন্ত্রের সমস্যা কমায়, টক্সিন পরিষ্কার করে, মাইক্রোবায়োমকে ভারসাম্য রাখে।
কেন চা বা কফি খাওয়া উচিত নয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চা বা কফি সকালে খালি পেটে খেলে অম্লতা বাড়তে পারে, পাকস্থলীর আস্তরণে জ্বালা তৈরি হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনও হয়। তাছাড়া ক্যাফেইন আসক্তি তৈরি করে, যা শরীরের প্রাকৃতিক শক্তি ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, এই পানীয়গুলোর প্রতিটিই উপকারী হলেও, সকলের জন্য একইরকমভাবে উপযুক্ত নাও হতে পারে। যেমন যাদের আলসার, পিত্ত বা কিডনির সমস্যা আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নতুন কিছু খাওয়া উচিত নয়।
